বৈশাখ-রাতে

বৈশাখ-রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল পাখির মতন এক ঝাঁক বাতাসের স্পর্শে
আমার শরীর নিয়ে অরণ্যের পাতার মতো খেলা করতে লাগল তারা।
বললে: আমরা অনেক-অনেক মাইল দূরের থেকে এসেছি
তোমার এই জানালার নিস্তব্ধতায়
মৃত্যুর মতন ঘুমের ভিতর
তুমি ধূসর মাটির মতো প’ড়ে রয়েছ ব’লে
আমরা টের পেয়েছি ঐ উত্তর আকাশের সমতল সোনালি নক্ষত্রের খেত থেকে
সেইখানে তুমিও তো আমাদের ভিতর ভিড়ে থাকতে পারতে
চ’লে যেতে পশ্চিম আকাশের পাকা যবের খেতের ভিতর
নক্ষত্রের থেকে নক্ষত্রে
কিংবা সাদা মেঘের গোধূম-ঘ্রাণে
এক কান্তারের ধ্বনি যেখানে অন্য কান্তার থেকে শুনতে পাওয়া যায় না।
নীলিমার রাজ্য যেখানে নীলিমার সাম্রাজ্যে মিশে রয়েছে শুধু
রাতের আকাশের অফুরন্ত ময়দান যেখানে জেব্রার হৃদয়কে
মানুষ-আত্মার দিকনির্ণয়হীন কল্পনায় উন্মুখ ক’রে রেখেছে
সেই শেষ সীমাহীন নীল প্রেইরির ভিতর
ব্র্যাডম্যানের ব্যাটের থেকে বল
অনন্ত কাল উড়েও মৃত্যুর আস্বাদ পায় না।