ব্রহ্মার রগড়

এখন শরীর ক্রমে হতেছে শিথিল
চশমা উঠেছে নাকে- ক্রমে-ক্রমে খ’সে যায় দাঁত;
প্রায়ই রাতে স্বপ্ন দেখি, চিত্রসেনীকে নয় আর
নোনা খেতে মাড়ি সাফ হল অকস্মাৎ!
ঘুম থেকে জেগে উঠে দাঁতে ঠোঁট বুলাই নীরবে
এখনও রয়েছে তবে- তবুও এখুনি শেষ হবে।

রয়েছে অনেক বই টেবিলে ছড়ায়ে
আরও ঢের বই আছে- অন্ধকারে মাকড়ের জালে;
পিতৃপিতামহদের প্রিয়- আমিও আগ্রহে
সেই সব নেড়েছি শিশুকালে!
ভেবেছি বয়স হলে- পাকাব আশ্চর্য রক্তে এই সব স্বর্গীয় মলম
এখন তবুও আর রাত হলে খাঁড়া হয়ে ওঠে না ক’ রোম।

আমার উঠান তবু এত দিনে হয়েছে প্রান্তর
অনেক বিন্নে ঘাস- কাশ- কাঁচপোকা গেছে জ’মে;
যদিও খেয়েছে গিলে কুটিরকে ইঁদুর উকুন
উপেক্ষিত বই আর নির্বাপিত মোমে!
পৃথিবীরও পাকস্থলীতে ক্রমে জ’মে কর্কট
তবুও উঠানে কিছু রয়ে গেছে বাংলার পট।

ছবি নেই- পটুয়ারা নেই কেউ
কেবল ইশারা প’ড়ে আছে;
এই ভালো- অধিক কল্পনা থাক্
সে-সবের মৃত্যু ফাঁসিগাছে!
মশার বিতর্কে গিয়ে পেয়েছে জলের মতো দর
যখন তুরস্কমণি- হেসে হেরে হয়েছে পাথর।

‘এইখানে’, কৃকলাস হেঁকে বলে, ‘ভাড়ু দত্ত হয়ে যাবে না-কি
অথবা গোপাল ভাঁড় নিজে!’-
প্রক্ষিপ্ত কাসুন্দি তবু সেই সব:
সহজে বৃষ্টিতে গেছে ভিজে!
বরং ফুল্লরা জানে- ডেলিরিয়মের রাতে পৃথিবীর ‘পর
দেঁতো হাসি খেয়ে কবি বার করে ব্রহ্মার রগড়।