চালের মচকার নীড়ে

চালের মচকার নীড়ে জাতিসাপ নিজে
যেমন প্রিয়ের সাথে বেড় বেঁধে থাকে
আবছায়া অন্ধকার জলার প্রদেশে
তেমন সে রয়ে গেছে নিজের চিন্তাকে
বুঝে নিয়ে- কোথায় রাত্রির শেষ- কখনও কি রাত
শেষ হবে- এ-রকম আঁধার-যে আসে পৃথিবীতে
মানুষের শরীরের অতলান্ত গোপনীয় হাড়
একে চায়- ডেকে আনে- সমস্ত কাজের ফাঁকে তবে
সমস্ত কাজের শেষে- যাহা জানি- ক্রমেই জেনেছি
অথবা অয়নরেখা ঘুরে গেলে তবুও কেবল
যে-জিনিস ঘুরে ফিরে সবের মাথার
উৎসুক প্রকোষ্ঠ থেকে ফেঁসে যায় শুধু
বিনয়ে বিবর্ণ হয়ে এক দিন মৃত-
মৃত যাকে চিনেছিল- তবু তার পর
যোনির ভিতর থেকে স্বচ্ছ অহঙ্কারে
পুনরায় বার হয়ে ভুলে গেছে সব
পৃথিবীর বেলোয়ারি আলোকের ধূমে;-
এই সেই অন্ধকার- মিশরের মমি’র ববিন
ল্যাটিনের ক্যাটাকম্ব- মৃত ভারতের
সঙ্ঘারাম- প্যাগোডার কালো চোখ- কালো বিড়ালের
সর্বদাই প্রগতির পথ দিয়ে হাঁটা
সর্বদা মেসারস্মিট ভেঙে যায়- স্পিট
মৌসুমি মেঘের মতো অপরূপ নীয়মানতায়
নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ খুলে- বিদ্যুতের আগে
ন্যূব্জ হয়- সর্বদা নির্ভীক কনভয়
অগ্রসর হতে থাকে- জলের মাকড়
যেমন নদীর তীরে অগ্রসর করে
অকৃত্রিম পিরুয়েটে নেচে চির-দিন
সর্বদা ভিখিরি হাঁটে দণ্ডির দুয়ারে
লোহার রেলিঙ খুঁড়ে লাঙল, কামান
নীরবে বানাতে গিয়ে পঞ্জরের হাড়ে
জন্ম দিয়ে চ’লে যায় অন্ধকার, ভীম
অস্পষ্ট সুসাময়িক দার্শনিকতার
একটি ববিন খ’সে পুনর্বার প্রোথিত মৃতের
শরীরের থেকে ক্রমে নতুন ইঙ্গিতে
আবার ফ্যারাও দর্পে জেগে উঠে জয়
নিসর্গমুণ্ডকে দেয়- সূর্যের মুণ্ডকে
যেখানে মোমের বাতি অমায়িকতায়
তুলে নিয়ে পৃথিবীর দীর্ঘ মনীষীরা
চলেছিল সন্তর্পণে লাঞ্ছনের খোঁজে
সেইখানে বায়ু, অগ্নি, তিমির মস্তক
টার্পুন সমুদ্র সূর্য এঁকে গেল দাতা
ভাঁড়, কবি, শ্যালক দিনের দিকে তবু
চেয়ে থাকে; কাঁকালকে কোলে নিয়ে নিবিড় নাগিনি
প’ড়ে থাকে অন্ধকারে- মিথুনের মতো।