চার্বাকের তুণ্ড ভেঙে ফেলে

চার্বাকের তুণ্ড ভেঙে ফেলে
বেদান্তকে তুলে দিয়ে বিষয়ীর হাতে
ফলন্ত বিম্বের মতো আমি
সূর্যের সোনালি রশ্মি জড়াতে-জড়াতে

বেঁচে র’ব- কয়েক মুহূর্ত আরও- এই পৃথিবীতে
যেন কোনও নদীর ভিতর থেকে বৈকালিক আলো
কোনও মৃত দিদৃক্ষুর আবাসের বিবর্ণ দেয়ালে
প্রজ্ঞার আমোদ নিয়ে অবশেষে স্বভাবে দাঁড়াল

অথবা মায়াবী কোনও- পৃথিবী চেনে না তার নাম
ঢের উঁচু মিনারের জানালার থেকে
যেমন তির্যক, ক্ষিপ্র দর্পণ ধ’রে
আপনার হৃদয়ের- হৃদয়ের দিকে চেয়ে দেখে

তেমন আমিও এই পৃথিবীর ভিড়ের ভিতর
স্তিমিত- স্তিমিত আরও চর্মচক্ষু ল’য়ে
মানুষের দ্বন্দ, দ্বেষ, অহঙ্কার খনির ধাতুর মতো তুলে
অগ্নিতে গালায়ে ল’ব- যেই অগ্নি নিবিড় বিনয়ে

র’য়ে গেছে মানুষের তিক্ত হৃদয়ের কেন্দ্রে
মানুষের তিক্ততম হৃদয়ের নিটোল আস্ফোটে
জেগে ওঠে শীর্ণ এক উৎসের মতন
সেইখানে- অর্ধদগ্ধ কৃকলাস ক্রমে-ক্রমে সোনা হয়ে ওঠে

তবুও মানুষ তার তিক্ততাকে নিয়ে শুধু
ক’রে যায় অবিমৃশ্যকারীদের মৃত্যু রচনা
আবদ্ধ ডিবের মতো যেন তার আয়ু, মৃত্যু, পরিচয়
যেইখানে অন্য ঢের নিখুঁত ছাঁচের সম্ভাবনা

র’য়ে গেছে। তবে সেই ডিম ছুঁড়ে ফেলে দাও
জীবনউজ্জ্বল কোনও জন্তুর মুখে
(চেয়ে দেখ) নিবিড় তামাশা এক জ’মে গেছে সে-সময়
ওষ্ঠাগত মানুষের প্রেমিকের বিবর্ণ চিবুকে

(মনে পড়ে) ঢের পুরাতন- ঢের কবি- দার্শনিক:
খড়ের চেয়ারে ব’সে একটি তৃণেরও নিয়ামক
হতে গিয়ে হেসে- উড়ে- মিশে গেল বায়ুর ভিতরে
কিন্তু তারা রেখে গেছে চমৎকার গল্প ও রূপক

অগ্নি-বায়ু-সলিলকে দিয়ে গেছে- তির্যক আমোদ
সমস্ত নক্ষত্র, সাদা ছায়াপথ করেছে গঠন
জ্যোৎস্না আর কুকুরের বচসায়- সময়ের পরিমাণ নিয়ে
ক’রে গেছে রমণীর পাণি নিপীড়ন

সাদা ভূত হয়ে তারা জেগেছে মৃত্যুর পর
দিয়ে গেছে মোম, নদী, পুরু স্পর্শ তুলট পাতার
যতই ভেবেছি কালো বিড়ালের ফিরোজা রঙের চোখ জ্বলে
অথবা নিমীল চোখ: অদ্ভুত অনন্ত বৃত্তাকার
—————————————————–
তাহাদের কাছ থেকে এই সব পুরস্কার নিয়ে
এই সব প্রত্যর্পিত স্বর্ণবিম্বে ধূলা
জমিতে দেই না আমি- বহু দিন সংরক্ষিত পাথরকে
পরিতে দেই না অই সমসাময়িক পরচুলা

আমার দেয়ালে তারা রয়ে গেছে স্তব্ধতায়
To complete & continue?