ছেড়া পকেটের থেকে

ছেঁড়া পকেটের থেকে হারায়ে গিয়েছে তার সিকি
যাক- যাক- কী-বা ক্ষতি
হয়তো-বা চিত্রগুপ্ত (তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে) রাখিয়াছে লিখে:
খানিকটা ক্ষয় হল, কোনও এক তুচ্ছ জীবনের
শ্লথ গোঁফ নেড়ে হেসে তামাশা পায় নি তবু টের
পরিশ্রান্ত চিত্রগুপ্ত;-
এইখানে নিম্নে- পৃথিবীতে
ফুটপাথ দিয়ে ক্লান্ত উকিলেরা হেঁটে যায়- নিঃস্ব হাতে;
যেন তারা জানে সব- রুগ্ন গোঁফে কেশে তারা করিতেছে জেরা:
কী ক’রে হারালে সিকি? জামার পকেট কেন ছেঁড়া?-
এই সব রুগ্ন গোঁফ- আত্নীয়তা;
এদের বধূরা পতিব্রতা
তারাও ভাবিছে লুপ্ত সিকিটির কথা
কালিমাখা হাঁড়ি, আর দেশলাই, বিড়ালের পাশে ব’সে
তারা বোঝে না ক’ কেউ;- হারায়ে গিয়েছে যার সিকি
এই সব দেশলাই, উনুন, বিড়াল, মৃত্যু, অন্ধকার- কোনও দিন খুঁজিয়া পাবে না তার টিকি
সে তো যক্ষ্মারুগি নয়- গয়েরে যদি-বা রক্ত পাওয়া যায় কভু
পথ ছেড়ে স্ট্রেচারে সে চড়িবে না তবু
কেউ নাই তার- ঠিক- তবু হাসপাতালের হাঁস
হবে না সে- বিবাহ সে করিবেই কোনও এক শুদ্ধ তরুণীরে
চাকরি সে জোটাবেই
কোনও এক অফিসে সে অবশেষে টাকার আভাস
পেয়ে যাবে;-
যৌবরাজ্য তাই তার সারা-দিন চলে পথে-পথে
মেছোবাজারের মোড়ে- চৌরঙ্গির ক্রীড়ার জগতে
নক্ষত্রের আচ্ছাদন কী করিছে আকাশের পর
জানে না সে,- দিন-রাত ট্রামের ঘর্ঘর
বিব্রত হয় না তাতে
(প্রগাঢ় থিসিস এক শুধু তার:)
এ-পৃথিবী কবি- ঋষি- কিংবা সদাগর?
বোঝে না সে- বুঝিতে চায় না আর কিছু।
ক্লান্তি- ক্লান্তি- ক্লান্তি- ক্লান্তি- তবু
বিবাহ করিবে এক শুদ্ধ নারীরে এক দিন
ফড়িঙের মতো তাই হয়েছে উড্ডীন
নষ্ট হয়ে যাক স্পেন- পুড়ে যাক চীন
ফড়িঙের কামনারা বেঁচে র’বে চির-দিন।