চিত্রিত বিম্ব

‘লড়েছ মার’এর সাথে আজীবন তুমি
নারীর পিছনে গেছ শিশিরের আকুতির মতো
প্রকৃতিকে হৃদয়ে চেয়েছ অকপটে
আর-আর কোন কাজ করেছ, বলো তো?’
ব’লে গেল নদীর ভিতর থেকে একটি চিত্রিত বিম্ব উঠে
আমার এ-হৃদয়কে সন্ধ্যার জলের মতো খুঁটে।

‘তোমার সকল কাজ নকশি গালিচার
নানা নমুনার মতো- নানা নমুনার মতো তবে
অথবা সাতটি রং রাতকানা মানুষকে পেয়ে
একটি রঙের নকশা চোখে জেগে র’বে?’
ব’লে গেল নদীর ভিতর থেকে একটি চিত্রিত বিম্ব উঠে
আমার এ-হৃদয়কে সন্ধ্যার জলের মতো খুঁটে।

‘যেখানে একটি সূর্য সেখানে বিভিন্ন বর্ণ আছে
রয়েছে বিভিন্ন রোল একটি সচ্ছল নদীতেই
এখন বিভিন্ন যুগ শুরু, শেষ হল
হয়তো তোমার মনে- একটি দিনেই’
ব’লে গেল নদীর ভিতর থেকে একটি চিত্রিত বিম্ব উঠে
আমার এ-হৃদয়কে সন্ধ্যার জলের মতো খুঁটে।

‘তুমিও ব্রহ্মা’র মতো। ঘরে মধু পাওয়া গেলে তুমি
তবুও তো জন্মেছিলে দৈনন্দিন বিন্দুর শপথে
কেন শূন্য সুদূর পর্বতে
গিয়ে এই জীবনের স্বাভাবিকতার সার হারায়ে ফেলেছ মতামতে।’
ব’লে গেল নদীর ভিতর থেকে একটি চিত্রিত বিম্ব উঠে
আমার এ-হৃদয়কে সন্ধ্যার জলের মতো খুঁটে।

‘এ-সব আবিষ্ট কাজ ক’রে গেছ তুমি
অদৃশ্য জন্তুর পিছে আজীবন ঘুরে-
সে কি তবে প্রণয়িনী, পরমাত্মা, অথবা সমাজ
অথবা একটি চোর সাত জন প্রেমিককে মেরেছে আঁতুড়ে।’
ব’লে গেল নদীর ভিতর থেকে একটি চিত্রিত বিম্ব উঠে
আমার এ-হৃদয়কে রাত্রির জলের মতো খুঁটে।