চোখের জলের মতো

চোখের জলের মতো যেখানে সমুদ্র ডাকে অন্ধকার গহ্বরের তলে!
সিন্ধুর ঢেউয়ের শ্বাস সেইখানে মৃতদের নিঃশ্বাসের মতো মনে হয়!
সেখানে সময় নাই,- ফুরায়েছে সেইখানে পৃথিবীর পথের সময়!
এক সুড়ঙ্গের জল মিশিয়া যেতেছে শুধু অন্য এক সুড়ঙ্গের জলে,
বাতাস অন্ধের মতো ফিরে যায় গহ্বরের থেকে আরও দূরের গহ্বরে,
অসুস্থ আগুন শুধু নিভে-নিভে জ্ব’লে ওঠে সেইখানে গন্ধকের ‘পরে
মৃতের ইচ্ছার মতো;- সেইখানে,- পৃথিবীর সব মৃত আকাঙ্ক্ষার দেশে
পৃথিবীর সিন্ধু সব পথ ভুলে সেইখানে- পাতালে সমুদ্রে গিয়ে মেশে;
সেই অন্ধকারে তারা নেমেছিল একদিন হাতে হাত বেঁধে পরস্পরে-।

সেখানে গোপন ব্যথা গুমরিয়া ফিরে যায়,- তবুও পিপাসা জন্ম লয়
অদ্ভুত জলের পারে;- হৃদয়ের সাধ সব সেইখানে রাত্রি জেগে থাকে,-
সান্ত্বনা আসে না তবু;- নরকের প্রহরীরা ফেরে শুধু গহ্বরের ফাঁকে!-
পৃথিবীতে যেই ধ্বনি বেঁজে ওঠে সেইখানে শুধু তার প্রতিধ্বনি হয়;
অসংখ্য আকাঙ্ক্ষা তবু সেইখানে বিষের লতার মতো আজও বেঁচে আছে
তাদের বুকের রক্তে;- অদ্ভুত জলের কাছে- অন্ধকার গহ্বরের কাছে
হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষার সকল অঙ্গার- সব পিপাসার বিনষ্ট ফসল
অস্পষ্ট সিন্ধুর জলে সেইখানে একবার খুঁজিতেছে আশ্বাসের স্থল!
ঢেউয়ের ছায়ার মতো সেখানে জলের ‘পরে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে-।