ধবল ঘোটক

হাড় আর অঙ্গারের নদীর উপর দিয়ে ছুটে যায় তাহাদের ধবল ঘোটক
এরা তবে কোনও কথা জানে না ক’ মানবীয়তার
মানুষীর মতো রূপ রক্তিম আবেগে যেন আঁধার
তারা এই পৃথিবীর ক্রমকক্ষাবর্তনের দ্রুত- দ্রুততর বিধায়ক

তাই তাহাদের চোখ ঝলিতেছে রাজহাঁসশূন্যগর্ভ নদীর মতন
যোজনবিস্তৃত লক্ষ ধুলোর বাতাস
তাদের ঘূর্ণিত স্তন থেকে ঝেড়ে ফেলিতেছে সময়ের ঘাস
জ্যৈষ্ঠের জ্বলন্ত রোদে স্ফুরিতেছে পারাবতযোনিদের দূর সঞ্চরণ
গাঢ় সাদা মেঘমালভূমিদের মতন ঘূর্ণন

তাহাদের চুল যেন অসংখ্য ঝড়ের কাক- নিমেষেই নিশীথে বিলীন
তাহাদের গূঢ় ঠোঁট ফাঁক হয়ে ফাঁড়িতেছে দাড়িমের মতো
তাহাদের হাত যেন শ্বেত- শ্বেত- ঝলসায়ে নরকের উনুনে সতত
শমনের সব-চেয়ে প্রিয়তম ঘড়ি তবু তাহাদের মণিবন্ধহীন

বাতাস জাগিয়া ওঠে- হলুদ পাতারা সব হরিণের খুরের মতন
নাচিতেছে- সব-চেয়ে শেষ ব্যাঘ্র প’ড়ে গেছে ফাঁদে
বিরুদ্ধ দুর্গের থেকে মুক্ত হয়ে আধখানা বৃত্ত যেন মিশে যায় নীলিমার বাকিটুকু চাঁদে
গোধূলির অগ্নি খেয়ে ভস্ম হয়ে ফুরাতেছে সিংহ’র সুপ্রজনন

কুয়াশার এই পার থেকে যেন দূরতম নক্ষত্রের নির্জন দুন্দুভি এক উঠিতেছে
যেই দিকে, হে পৃথিবী, কোনও দিন উড়ে যেও না ক’ ঊর্ধ্বতন
এই সব অশ্বারোহী তা হলে প্রকট হবে ভয়াবহ তন্বীর মতন
আমাদের ঊষালোক পুড়ে যাবে ক্ষমাহীন মরীচিকা বালুকার তেজে।