দিনরাত্রি

সমস্ত দিন
সমস্ত পৃথিবীই যেন আকাশ।
চারি দিকে রৌদ্রের ভিতর র’য়ে গেছে নির্মল জলের অনুভূতি;
জল আকাশ ও আগুনের থেকে এই সব রাত্রির জন্ম হয়;
অন্তহীন শুভ্রবিবেকী নক্ষত্রের;
এই সব স্থায়ী জিনিস চল-বিশ্বলোকের;
মানবজীবনের; এদের অনবচ্ছিন্ন উজ্জ্বল প্রবাহে ধৌত হয়ে
সমস্ত গৃহযুদ্ধের গৃহবলিভুকদের রক্তের
শেষ বিন্দুও খুঁজে পাবে না কোথাও।
কোথাও থাকবে না অন্তর্জাতিক অন্যায়ের ছায়া আর।

দেখা যাবে দিন সূর্যশরীরী;
যাযাবর হাঁসকে নিয়ে চলেছে মেঘের
ফেনা-ওড়ানো দূরতম নীলিমায়;
জেগে উঠবে বিকেলের শিয়রে
সাগরের বাতাস যেন- দূর ময়দানের;
অন্তহীন নক্ষত্রের চলা ফেরার দেশে পাওয়া যায় তাকে;
ঐ ঝাউ গাছের আঁধারের ভিতরেও;
বন্দরে নগরে
মানুষের হিংস্র বেড়ালের মতো গর্জনকে বিনমিত ক’রে
করুণার রাত্রিঋতুর মতো
পাওয়া যায় তাকে- পাওয়া যায় তাকে।

আজকের মলিনতা রক্ত কোথায় লীন হয়ে যাচ্ছে
সময়ের মনে- নিরবচ্ছিন্ন বিসরণে-
দিন ও রাত্রির অন্তহীন
জলঝর্ণার শুশ্রূষার শব্দের ভিতর।

পূর্বাশা । ফাল্গুন ১৩৫৬