দীপ্তি

তোমার নিকট থেকে
যত দূর দেশে
আমি চ’লে যাই
তত ভালো।
সময় কেবলই নিজ নিয়মের মতো;- তবু কেউ
সময় স্রোতের ‘পরে সাঁকো
বেঁধে দিতে চায়;
ভেঙে যায়;
যত ভাঙে তত ভালো।
যত স্রোত বয়ে যায়
সময়ের
সময়ের মতন নদীর
জলসিঁড়ি, নিপার, ওডার, রাইন, রেবা, কাবেরীর
তুমি তত বয়ে যাও,
আমি তত বয়ে চলি,
তবুও কেউ-ই কারু নয়।
আমরা জীবন তবু।
তোমার জীবন নিয়ে তুমি
সূর্যের রশ্মির মতো অগণন চুলে
রৌদ্রের বেলার মতো শরীরের রঙে
খরতর নদী হয়ে গেলে
হয়ে যেতে।
তবুও মানুষী হয়ে
পুরুষের সন্ধান পেয়েছ;
পুরুষের চেয়ে বড় জীবনের হয়তো-বা।
আমিও জীবন তবু;-
ক্বচিৎ তোমার কথা ভেবে
তোমার সে শরীরের থেকে ঢের দূরে চ’লে গিয়ে
কোথাও বিকেলবেলা নগরীর উৎসারণে উচল সিঁড়ির
উপরে রৌদ্রের রঙ জ্বলে ওঠে- দেখে
বুদ্ধের চেয়েও আরও দীন সুষমায় সুজাতার
মৃত বৎসকে বাঁচায়েছে
কেউ যেন;
মনে হয়,
দেখা যায়।
কেউ নেই- স্তব্ধতায়; তবুও হৃদয়ে দীপ্তি আছে।
দিন শেষ হয় নি এখনও।
জীবনের দিন- কাজ-
শেষ হতে আজও ঢের দেরি।
অন্ন নেই। হৃদয়বিহীনভাবে আজ
মৈত্রেয়ী ভূমার চেয়ে অন্নলোভাতুর।
রক্তের সমুদ্র চারি-দিকে;
কলকাতা থেকে দূর
গ্রিসের অলিভ-বন
অন্ধকার।
অগণন লোক ম’রে যায়;
এম্পিডোক্লেসের মৃত্যু নয়-
সেই মৃত্যু ব্যসনের মতো মনে হয়।
এ-ছাড়া কোথাও কোনও পাখি
বসন্তের অন্য কোনও সাড়া নেই।
তবু এক দীপ্তি র’য়ে গেছে।

বৈশাখী ৪। ১৩৫২