দূর থেকে চোখ রেখে

এখন অনেক দিন দূর থেকে চোখে রেখে তবু
এক দিন এক তিল ভুলের ভিতরে ধোলকধাঁধায়
তোমারে হারায়ে গেছি পৃথিবীর জনকলরবে
তাহাকে গোলকধাঁধায় ঘুরে মনে হয় অপর দুয়ারে
কোথায় সে হল নিঃসরিত?
অথবা আমারই কাছে রয়ে গেছে মনে ভেবে নিয়ে
মানুষের জীবনের হেমন্তের দিনে যেই নারী
নির্মল স্বাধীন ভাবে খেতেছে ভাঁড়িয়ে?

সেই থেকে পিতাদের কাছে আমি যে-ঋণ করেছি
শোধে না শুধেই প্রত্যাহার ক’রে ফেলে দিতে চায় মন
একটি মানুষ- আর এক দিন তার
এ-জীবন সাধারণ ব’লেই অনন্যসাধারণ
এ-রকম মনে হয়ে হয়েছিল সব আগে সত্য এক দিন
মৃত পিতৃলোক হেসে দিয়েছিল সায়
তবুও সময় আজ এয়োদশ শতকের থেকে বিশ একুশ শতকে
আমার ভূখণ্ড আজ পৃথিবীর বাজারে ছড়ায়।

কোথায় তোমার আত্মা সময়ের ফাঁস
সটকায়ে ক্ষিপ্র বান-মাছের মতন
নিজেকে প্রশান্ত নারী মনে ভেবে নেয়
তোমাকে কপট ভাবে পৃথিবীর আরও মূঢ়তর জনগণ

ভোরের নদীর সাড়া ঘাসের উপরে।
কোথাও গির্জায় ঘণ্টা বাজে।
দুপুর বিশাল হল আরও বড়ো আকাশের নিচে
বরিশাল- কলকাতা- দিল্লির- বারাণসী মানবসমাজে
অগণন সময়ের সূচনা ও সীমা
এইখানে মিশে আছে বাজারের বিকীর্ণ দুপুরে
এখানে মেখলা সেন দ্বিতীয় বারের মতন তাকালে:
শতকের নীলিমার নীড়ে দূরতায়
দুপুরের জলে সূর্য জেগে আছে যত কাল চাওয়া হয়েছিল;
নিমেষেই নেমে আসে বিকেলের নদীটির জল
তাহার শরীর-স্থানে- মায়ের আকাশে এসে নিজেদের বিমাতাদেরও
বৃহস্পতি নক্ষত্রের কান ঘেঁষে নীরবে মঙ্গল
সৃষ্টি যেতেছে চ’লে স্বাভাবিক রাতে
নির্মল মির্মির ক’রে কেউ কারু নয়
মাঘের সকালবেলা আকাশের পৃথিবীর দিন মাস ম’রে আছে দেখে
জলের ভিতরে গলা ফুলিয়ে দুইটি হাঁস সামাজিক সূর্য খুঁজে নেয়
পরিণয় খুঁজেছিল- তবু মৃত গুগলির স্বাদ ভালো, মনে হয়।