এক অন্ধকার থেকে এসে

এক অন্ধকার থেকে এসে
অন্য-এক আঁধারের দিকে
মুখ ফেরাবার আগে-
কয়েক মুহূর্ত কাজ কথা চিন্তা রয়েছে এ-জীবনের।
দেখেছি সূর্যের আলো, নিয়ন বাতির বিচ্ছুরণ,
অন্ধকার অজন্মা প্রান্তর, মৃত অর্ধমৃত নগর বন্দর,
শোকাবহ আলো শব্দ শেল,
ক্লান্তিহীন ক্রেন এরিয়েল,
(নীলিমায় এয়ারোপ্লেন হেলিকোপ্টারের
এঞ্জিনের
অনুরণনের
আর-এক রকম সুর:)
হেমন্তের মধ্যরাতে
দক্ষিণ সাগরগামী হরিয়াল বুনো হাঁসদের
রাশি-রাশি কালো বিদ্যুতের বিন্দু,
ডানার ঝাপসা গুঞ্জরণ
– দেখেছি জেনেছি অনেক দিন-
মানুষের সাথে
মিলন বা অমিলের কঠিন রহস্যসুতো নিয়ে
সময়ের অজ্ঞেয় সাগরতীরে গিয়ে
ধীরে-ধীরে হৃদয়ের ক্ষয়
দেখেছি মানবদের ইতিহাসে বার-বার হয়।
মনে হয় যেন মানুষের মন তবু কোথাকার
দুই কালো বালুতীর ভেদ ক’রে ফেলে
চলেছে নদীর মতো-
চারি-দিকে জনতার সকাতর কোলাহল-
ঘর বাড়ি সাঁকো।
পাখির ও মানুষের করুণ পায়ের চিহ্ন
পায়ের কৃচ্ছের চিহ্ন সব-
মুছে ফেলে বুঝি অনাদির সাদা-কালো
নির্দোষ আলো আর অন্ধকার আবার সঞ্চয় ক’রে মন
জ্ঞানপাপ মুছে ফেলে হ’তে চায় স্নিগ্ধ জ্ঞানবৃক্ষের মতন।

[কবিতা। পৌষ ১৩৬১]