ফুল পাখি পাতা নিয়ে

ফুল পাখি পাতা নিয়ে কত দিন করিয়াছি খেলা
জানি নাই আরও গাঢ় ফুল আছে পৃথিবীতে
নিঃসঙ্গ বয়সে তবু ঘাসে শুয়ে মনে হল রাত্রির শীতে
কোনও এক প্রত্যুষের যূথিকারে করিতেছি যেন অবহেলা
তখনও তোমার মুখ- নারী-অবয়ব কিছু দেখি নাই আমি
তুমি যে আসিবে তাহা ময়ূরের মতো যেন বিবর্ণ প্রাসাদ থেকে নামি
সোনালি খড়ের ঘ্রাণে- লোহিত আলোয় আমি মানবের মতো আত্মা পেয়ে
রোমহর্ষে দেখিলাম মানবীর মতো তুমি রয়েছ আমার দিকে চেয়ে।

তবে আমি আর কেউ নই, আমি তোমারই মানব
ভাসিতেছে আকাশের সাদা মেঘ- নীল মেঘ- ঘাস- নদী- এই সব নির্জন প্রদোষে
যদিও ছিলে না তুমি- তবু তুমি রয়েছিলে ব’সে
মায়ের ভ্রূণের থেকে ঝ’রে আমি তোমারে করেছি অনুভব
নদীর জলের দিকে চেয়ে তাই মনে হত আরও কোনও এক জল ইহার পিছনে
রয়ে গেছে;- গোলাপের হিম মুখ হৃদয়েরে বুঝায়েছে যেন নিপীড়নে
আমি নই- সেই অন্য গোলাপের মুখ তুমি নাও খুঁজে পৃথিবীর থেকে
গোলাপ, কপোত, ঘাস স’রে গেছে তুমি এসে দাঁড়ায়েছ দেখে।

এক দিন ধূসর মেঘের মতো অতীতের পৃথিবীর স্তর
কমলা মেঘের মতো ভবিষ্যৎ রয়েছে বিছায়ে
মাঝখানে তুমি আমি যেন এক মানবীর বেণিতে বিনায়ে
একখানা নীলাকাশ;- কত দিন পরে যেন দুই বন্ধু দেখা পেল বনের ভিতর
কোন এক শিশুকালে এই উপকথা-বনে ছিল যেন তারা
পাখিদের মতো নগ্ন;- সেই দিন তবু কোনও প্রেমের ইশারা
বোঝে নাই;- আজ যেন পক্ব আনারস সব চারি-দিকে বনের ভিতরে
দুই দেহ চায় না ক’- নীলিমারে দুই ভাগে কেউ খণ্ড করে।

তোমার পৃথিবী আর আমার পৃথিবী মিলে এক একাকিনী
পরিতৃপ্তি;- অনেক মৃগীরা যেন নক্ষত্রের জানালার থেকে
তাহাদের অনুভব অন্ধকার রজনীতে তৃপ্ত হল দেখে
নারীর প্রেমের কাছে- বুঝে নেয়- নক্ষত্রের স্থিতি কত ঋণী
জ্যোৎস্নায় আলোকিত দু’ পাশের দুই স্তর জলের ভিতরে
খানিকটা অন্ধকার জল যেন অন্য কোনও স্তব্ধ আশা করে
আমরা দু’ জনে যেন সেই অবিরল জল যাহারা ভগ্নাংশ হয় হয়ে যায় শব
আমরা দু’ জনে মিলে কোনও এক রূপসির আননের মতন নীরব।