গভীর শীতের রাতে

গভীর শীতের রাতে বিছানার স্বপ্ন থেকে উঠে
রাজীব দেখিল তার ছারপোকা-রক্ত- ক্লান্ত- ধূসর মশারি
জাবর কাটিছে যেন ঢের প্লুত অতীতের
সমস্ত শরীর তার ভিজে গেছে ধমনীর ঘামে
বিষুবরেখার সূর্যে ক্রূর- লোল- জলের ভিতর থেকে
প্রবালশিকারি এক ভয়ঙ্কর ধীবরের মতো
উঠে এল যেন তার অবয়ব- প্রাণ-

মশারি সরায়ে ধীরে- দেশলাই তুলে নিয়ে
জানালার ফাঁক দিয়ে তাকাল সে- অরণ্যের বাঘিনি’র মতো:
আশ্চর্য সুন্দর তুমি জ্যোৎস্নারাতে- তবু কেন বিপরীত তুমি
কেন তুমি আমাদের রক্তস্রোতে আতঙ্কের রোমহর্ষ এনে
বলিতেছ বার-বার অশ্রু আর বিদ্বেষের মাইলের-পর-মাইল কড়ির পাহাড়ে
হাড়ের পাথারে হাড় হতে হবে- হতে হবে-
আমি পারি?- আমি পারি না কি?- সব প্রশ্ন শিশুদের দোলনায় ফেলে
আঁধারের নম্র বালি উটপাখিদের তরে রেখে
দু’ চোখ মেলিতে হবে- মেলিয়া ধরিতে হবে- চকবাজারের রৌদ্রে চির-দিন
ইঁদুরের ভিড়ে ব’সে বুড়ো এক দর্জির মতন।
প্রবীণ শরীর তার- (বলিরেখা)- সেবা তার সুতো হয়ে সূচের বিবরে
গলিতে পারিত যদি
এক দিন ভস্ম হয়ে- ধুলো হয়ে- সূচটাকে গিলিবার আগে।