হাতের মুঠে অনন্ত সময়

অনেকে অনেক কথা ব’লে গেছে
কেবল নিস্তব্ধ হয়ে শুনে গেছি আমি
খোঁড়লে নীরব জল পান ক’রে ব্যস্ত কুকুরেরা
জন্মকে স্বীকার ক’রে চ’লে গেছে জলের দরের মতো দামি।

আমার শৈশব থেকে যৌবনের সঙ্কল্পগুলোকে
বালির তোড়ার মতো ছেড়ে দিয়ে নিবিড় বাতাসে
কাঁচের প্রাসাদে ব’সে আপামর দিনের বেলায়
আবার নতুনতর অনেক সঙ্কল্প মনে আসে

নিকটে হাতের কাছে র’য়ে গেছে জলের গেলাস
এ-পৃথিবী কাঁচ আর সরিতের জল
অনন্ত আকাশ ঘিরে সূর্য- কাঁচ
অসীম মরুভূ ঘিরে কাঁচের অনল

আমার হৃদয়ে শক্তি জেগে ওঠে এই সব অনুভব ক’রে
সুদীর্ঘ দিনের রশ্মি আমার সহায়
সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ড আছে সর্ষের বীজে
সকল সময় আছে এক লহমায়

কেবলই বালির ঘড়ি ব’লে যায় সময় হয়েছে ঢের
কাজ করো- প্রেম দাও- করো সঙ্গম
তোমার একটি গ্রন্থি এই বার এঁটে ফেল তুমি
আমার ধবল হাড় ধুয়ে ফেলে প্রতি-নিয়তই সংযম

কাজ করে- কথা বলে- প্রেম দেয়- সঙ্গম করে
একটি উন্মীল গান অগ্নির অক্ষর দিয়ে লিখে
তার পর শূন্যতায় ব’সে থাকে কৃকলাস- দেয়ালের ‘পরে
সমস্ত সুদীর্ঘ দিন অন্ধ হয়ে সূর্যের স্ফটিকে

অনন্ত সময় আমি হারায়েছি অবিরল আলোর ভিতরে
উচ্ছল জলের রোলে- মরীচিকা-কণিকায়- সূর্যের কাঁচে
আমার একটি প্রেম- আমার একটি গান তবুও কোথায়?
কেবল হাতের মুঠে অনন্ত সময় প’ড়ে আছে।