হেমন্তের জ্যোৎস্নায়

মনে হয় হেমন্তের জ্যোৎস্নায়
সাদা তাম্বুর মতো কুয়াশায়
আজও ঢের লোক দূর-দূর-প্রান্তরের ক্যাম্পে
নারী মেষ গাভীযূথ ল’য়ে আদি পিতাদের মতো সন্নিবদ্ধ
হয়তো-বা দীর্ঘ দেহ তাহাদের- জটায় ধবল;
এখনও শৈশব প্রাণে
কিংবা আরও শৈশবের সুর ভেসে আসে মাইক্রোফনে
বালটিক সমুদ্রের তীর থেকে।

এইখানে হেমন্তের আসন্ন কুয়াশা রুষ্ট ফণার মতন
সমাকুল গ্যাসালোকে হারায়েছে ফণিনীর ধন।
লাল, নীল, ট্রামের প্রদীপ:
ঘড়িধরা দুই কোয়ার্টার চেয়ে থেকে মনে হয়
অচেতন আমাদের সাথে
নেপথ্যের চেতনার যোগ;
নিসর্গ করেছে এসে নিজেরে প্রয়োগ
ইহাদের প্রতীকের মতো ভুলে সমাচ্ছন্ন নগরীর রাতে।

আধো চেনা- আধো নিমন্ত্রণ
আমরাও;
আমরাও বিসর্পিত গতির মতন
বিজর, চেতন, অচেতন।
তবু
কোথাও রয়েছে নিয়ন্ত্রণ
হয়তো-বা কভু।

যত জোরে চলি- তত দেরি;
বিদ্যুৎ: কমঠের মতো মনে হয়
গভীর সাহস চোখে- সজারুর মতো ভয় কণ্টকময়।
তবুও আরাধ্য চোখে নিমগ্ন আঁধার।
সূর্য এসে দেখে যায়- হেসে যায়- জীব পায় লয়।

এখানে উল্কির হর্ষ- কয়লার গুঁড়ি, ফেনাময়
সিন্ধুর কাকের মতো রাত্রির আগুলফ-লম্বনে জেগে রয়।
সে কোন সমুদ্র এত প্রীত, আধোমৃত, এত ভীত, এত বরাভয়।

হে আঁধার অগণন গলি,
কাহিনি গিয়েছে চ’লে অনেক আশ্চর্য গল্প বলি;
তারপর নেত্ররোগ- ইন্দ্রধনুরাশি
সূর্যগ্রহণের ঘোরে উঠিতেছে ভাসি
লক্ষ মূঢ় যতদূর চ’লে যায় তত
আরও রক্ত রবাহূত পেন্যুম্ব্রার মতো।