হেমন্তের ভোরে

চতুর্থ অঙ্কের ফাঁদে অন্ধকার ক্রমে এসে ঘনায়েছে চোখে
বিস্ময় লাগে নি ঠিক, যবনিকা উঠে যায় অন্য মঞ্চালোকে
এক দিন যেই শিশু জন্মেছিল হেমন্তের ভোরে
তাহার হৃদয়ে কিছু দীপ্তি ছিল; এক দিন যে-বালক
পুনরায় খেলা ক’রে ফিরেছিল হেমন্তের মাঠ থেকে একা
তাহার হৃদয়ে কোনও আশা ছিল;- যে-মানুষ তবু এক দিন
নিজের ছায়াকে ডেকে অগ্রসর হয়েছিল পাহাড় নদীর জলে জনতায়
সে ও তার প্রগলভ হৃদয় যেন মৎস্যদম্পতির মতো লোভে
অসংখ্য জীবনবীজ সঙ্গে লয়ে সূর্যের আলোেকে
নদীর জলের থেকে আলোড়িত হয়ে পূর্ণ সবুজ সমুদ্রে
চলেছিল; পিছল জেলেরা সব মাইল-মাইল জলে
অদ্ভুত অক্ষুণ্ন জাল রেখে গেছে- ভুলে গিয়ে

এই সব উপমায় পৃথিবীকে খুলে ফেলি আমি আজ ভোরে
খুলে ফেলে দিতে চাই; মনস্বিনী প্রতিবেশিনীর মতো নীল
সমুদ্রের ঢেউ সূর্য যখন রয়েছে আজও-
তবুও বিলোল সূতা চারি-দিকে ঊর্ণনাভের চেয়ে সমীচীন।
মৃত্যু যদি বীজ হয়- তবে আমি জানি- সেই বীজে
সময় ব্রহ্মাণ্ড তার ছায়া দেখে শিহরিত হয়
আমরা তবুও এই মৃত্যুকে দেখে- তার শীতল ধূর্ততা
কানে শুনে- দেহ দিয়ে ছুঁয়ে ফেলে- রক্তের ভিতরে
এখন সূচনাসূত্রে ফিরে যাব- অধীর রঙিন
বম্বিনের মতো নয়- প্রসিদ্ধ পঞ্চম অঙ্ক শেষ হলে- ভেসে
আর-এক আকাশরেখা ফিরে পেতে- অন্য এক সময়ের স্তাবকের
সেই মৃত্যু আমাদের আজকের। ব্যাজস্তুতির মতো নয় তবু।
পাঁচটি বিখ্যাত অঙ্ক নিয়ে আজ বিষয়ী মঞ্চের উন্মেষ নিজের জিনিস।
তবুও কবরে গিয়ে নিজের চপ্পলে- চুলে মৃত্যু নিয়ে গ্রীনরুম থেকে মুক্তি নেই।