হেমন্ত

আজ রাতে মনে হয়
সব কর্মক্লান্তি অবশেষে কোনো এক অর্থ শুষে গেছে।
আমাদের সব পাপ- যদি জীব কোনো পাপ ক’রে থাকে পরস্পর
কিংবা দূর নক্ষত্র গুল্ম, গ্যাস, জীবানুর কাছে-
হিয়েছে ক্ষয়িত হয়ে।
বৃত্ত যেন শুদ্ধতায় নিরুত্তর কেন্দ্রে ফিরে এল
এই শান্ত অঘ্রাণের রাতে।

যতদূর চোখ যায় বিকোশিত প্রান্তরের কুয়াশায় ব্যাস
শাদা চাদরের মত কুয়াশার নিচে শুয়ে।
হরিতকী অরণ্যের থেকে চুপে সঞ্চারিত হয়ে
নিশীথের ছায়া যেন মেধাবী প্রশান্তি এক রেখে গেছে
প্রতিধ্বনিহীন, হিম পৃথিবীর পিঠে।
সুষুপ্ত হরিব- লোষ্ট্র; মৃত্যু আজ; ব্যাঘ্র মৃত; মৃত্যুর ভিতরে অমায়িক।
জলের উপর দিয়ে চ’লে যায় তারা; তবু জল
স্পর্শ করে নাকো সিংহদুয়ারের মত জেগে ওঠে ইন্দ্রধনু
তাহাদের যেতে দেয়; অদ্ভুত বধির চোখে তবু তারা
অভ্যর্থনা করে নাকো আজ আর আলোর বর্বর জননীকে।
বাংলার শস্যহীন ক্ষেতের শিয়রে
মৃত্যু, বড়, গোল চাঁদ;
গভীর অঘ্রাণ এসে দাঁড়ায়েছে।
অনন্য যোদ্ধার মত এসেছে সে কতবার
দিনের ওপারে সন্ধ্যা- ঋতুর ভিতরে প্লাবী হেমন্তকে
দৃষ্ট প্রত্যঙ্গের মত এই স্ফীত পৃথিবীতে
ছুরির ফলার মত টেনে নিয়ে।
বেবিলন থেকে বিলম্বিত এস্প্লানেডে
বিদীর্ণ চীনের থেকে এই শীর্ণ এককড়িপুরে
মানুষের অরুন্তুদ চেষ্টার ভিতরে।