যাহারা খসিয়া গেছে

যাহারা খসিয়া গেছে দক্ষিণ হাতের থেকে জীবনের,- একে-একে ঝরে
বৈতরণী নদীটির অন্ধ জলে; তাহারা কখনও ফিরে আসিবে না আর
সংসর্গ দেবে না আর; কালো চোখ তুলে স্পষ্ট জানিবার কিম্বা জানাবার
অধিকার নাই আর তাহাদের; যেখানে করমচা-শাখা মরমর করে
যেখানে নরম নদী খেলা করে ভাঙা মন্দিরের শূন্য ইটের ভিতরে
যেখানে মেহেদি-ঝোপে দুপুরের ঝিঁঝিগুলো অবিরাম তুলিছে ঝঙ্কার
জারুলগাছের নিচে ঘুমায়েছে বাঘ এক আঁকাবাঁকা বিচিত্র ডোরার
ছালে তার সুন্দরী’র শাখাগুলো অপরাহ্ন ভরি কালো ছায়া ফেলে নড়ে

যেখানে গোক্ষুরা এসে বনচালতা’র গন্ধে শুয়ে থাকে সন্ধ্যার বাতাসে
নির্জন নরম দিক- হয়তো মঠের ছায়া মুখ দেখে পুকুরের জলে
হয়তো সাঁঝের চিল রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে তালের বনের বুকে আসে
কলমি’র দাম ভেঙে হয়তো হাটের নৌকা ঘাটে বাঁধে হিজলের তলে
মৃদু তামাকের গন্ধে গানে-গল্পে দিক ভরে- পরস্পর যারা ভালোবাসে
কাছে আসে,- শিথানে অঘ্রান-চাঁদ- মৃত্যু মুখ গুঁজে থাকে মনাইয়ের ঘাসে।