যে-আলোক আমরা দেখিয়া গেছি

যে-আলোক আমরা দেখিয়া গেছি, হে মহিলা, আজ এই ঝড়ের ভিতরে
স্ফটিকের চিমনির বৃত্ত জুড়ে (চেয়ে দেখ) শিখা তার বিদ্যুতের মতো যেন ধরে
(সব গণ-হৃদয়ের আঁধারকে) সাধারণ আঁধারের থেকে তবু হিরণের চেয়ে তাহা স্থির
বলিবে সন্তান এসে এক দিন হয়তো তোমাকে, নারী, এই জননীর
মেধা থেকে জন্ম নিয়ে আমার চোখের দৃষ্টি হয়েছে গভীর।

যখন স্মরণ করি চিলের কঠিন ডানার থেকে ধাতু চেয়ে নিয়ে
আমার শৈশব-কাল কেটে গেছে কলম শানিয়ে
সকাতর পালকের- কলমকে সমর্থন করি আজও খড়্গের আগে
যখন পর্বত দেখি দুপুরের প্রবীণ ভূভাগে
মৃত পিতাদের মতো তীক্ষ্ণ- শরীরের মৃত্যু নিয়ে জাগে।

ক্ষুদ্র খণ্ডিত সে-ও- তবুও নিরেট কর্মময়
দিনগুলো- প্রতিকূল গণিতের রিরংসাকে ক’রে গেছে জয়
আবার প্রভাত হলে যেইখানে প্রাথমিক উদ্দীপনা নিয়ে রাজহাঁস
হঠাৎ বজ্রের শব্দে মাঠের ঘোড়ার বুকে জাগায়েছে ত্রাস
(সব হর্ষ স্তব্ধ হলে তখন হাস্যের বস্তু মানুষের নিজের হৃদয়)

আমারও হৃদয় তাই এ-জীবনে দলিলের পরাজয় ছাড়া
জানে না ক’ কবিদের তরে আরও বেশি কিছু যায় মাঠে মারা
আমাদের গৃহ নাই- সঙ্ঘারামে মুমুক্ষার বায়ু
নাই;- আকাশে প্রতীক নাই;- মৃত্তিকায় দাঁড়কাক শানিত জটায়ু
প’ড়ে রবে; সময়ের অভিপ্রায় পূর্ণ হলে কে-বা আর চায় পরমায়ু।