যে-স্থবির কবরের পাশে

যে-স্থবির কবরের পাশে এসে দাঁড়ায়েছে
যেই শিশু আবার ভূস্তর থেকে উঠে এল
জননীর দোলনায়;- যেই দ্রুত নির্ঝরিণী নদী
রুপালি মাছের ঢের ক্রীড়া নিয়ে- জানে- তবু-
হৈমন্তিক পাহাড়ের ‘পরে স্তব্ধ সিন্ধুকের মতো তার প্রাণ
প্রতিকূল প্রেতাত্মার প্রিয় ছিল- এক দিন-
প্রভাতের সচ্ছল জলের দেশে এই সব অনুভাব
কলাকুশলীর অবিমর্ষ রেখাঙ্কন-রীতি
মৃত্যু নয়, নিস্তব্ধতা নয়, মৃত্যু নয়
স্থবিরকে আস্থা দেয় আঁধারে শায়িত হতে
শিশুকে ফোটায়ে তোলে ক্রমে সমুজ্জ্বল
তাসের মন্দিরে, যেইখানে- মনে হয়- অবলোকিতেশ্বর
অবলুপ্ত সম্পূর্ণ ছবির থেকে চেয়ে থাকে মানুষের মুখে
সেইখানে প্রত্যুষের অর্থ পাওয়া যায়- নিশীথের;

সেইখানে তরবার- ভাঁড়- রাজা- বারাঙ্গনা- অধ্যাপক- ঘোড়া-
সর্বদাই টের পায়, কী করে আসন্ন সূর্যের প্রিয় চুমা পৃথিবীকে টানে-
টের পায় পৃথিবীকে টানে; বিম্বজল বিভোর প্রশান্তি আসে ভিখিরির চোখে
সকলকে অভিভূত সুশৃঙ্খল হরীতকী মালার মতন
সৌকর্যে ঘুরিতে দেখে। কবরের অন্ধকারে তবু
মনীষীরও মৃত দেহ খেতে-খেতে কৃমিরাও জানে
মমি শুধু ঘুরিতেছে; অচকিত থেকে রাত্রে নেমে
অধীর চৈতন্য আনে- সূর্য উঠিবার আগে-
পৃথিবীর পূর্ণগর্ভা রাত্রির মতন;
চিতা’কে চামড়া দিয়ে লক্ষ কালো নক্ষত্রের মতো
অরণ্যের অগ্নিবাণ অন্ধকারে- বুঝাতেছে মুমূর্ষ মৃগ’কে
মৃত্যুও নিক্কণ স্রোত;- এই সব মেধাবী ইশারা
আমাদের মৈথুনের সহায়ক, তোমাদের নব প্রসবের।