জীবিত ও মৃত

আমরা সম্মুখপথে চ’লে যাই- আশা ক’রে
মঙ্গোলীয় বাঘ দেখে ভীত
হই নাই। তবুও ধূসর সুর ভেসে আসে গাঢ় রাতে।
হয়ে যায় আমাদের যাত্রা স্থগিত
জনরবহীন ত্যক্ত সমুদ্রের তীরে
পেঁচা’র নখের মতো বাঁকা এক চাঁদের তিমিরে
সেখানে মৃতেরা রয়েছে ধূম্র- ক্যারেরা প্রস্তর হয়ে সব
দেবতা-আবিষ্ট পূর্ণ অশ্বত্থের মতন নীরব
পৃথিবীর সূর্য নিচে চ’লে যায়
খেলার বলের মতো ক্ষুব্ধ হয়ে শেষে
রূঢ় সেই চোখ নেড়ে অনুসূর্যের আলোচনা
এইখানে মৃতদের দেশে
দিতি-অদিতির সুত তারা সব- তবু এত স্থির
তুলাদণ্ডে রুপোর দু’-আনি ফিকে খোঁটা দিতে এখানে সমীর
ভয় পায়। পৃথিবীর দেয়াল উত্তীর্ণ ক’রে ছবি আঁকে না কি কবি:
মকরাক্ষ, মাতাল পহ্লবী
কিংবা মাইনোটুর
ক্রিটের মতন দেশে মস্তিষ্কের গোলকধাঁধায়
নিকট- নিকটতম পথও কত দূর।

আমিও পকেট ভ’রে ঘুম নিয়ে
চ’লে যাই পৃথিবীর দেশে
ফিরে যাই ক্রীড়ারতা স্বগোষ্ঠীয় যুবতীর পায়ে চূর্ণ বরফকণার মতো ভেসে
সরমাঙ্গ কৃষ্ণ মায়ের খুরে খোঁচা খেয়ে ক্ষুব্ধ ক্ষত ঘেঁষে।
——————————————————
কোনও দিকে সূত্র নাই প্রথম অন্তিম পর্যায়ে
প্রেমিকেরা ম’রে গেছে সমুজ্জ্বল মেঘ নিয়ে- নভোনীলিমায়
প্রেমের আর্ষ-প্রয়োগ এই- সুষুপ্তেরা ভাবিতেছে ডাইনে আর বাঁয়ে
তখন নিবিড় এক অহঙ্কার জেগে ওঠে নর্তকীর পায়ে- কুয়াশায়
উটের কঙ্কাল কাঁপে হলুদ বালির নিচে স্থবিরের মতন নীরবে
আমিই নক্ষত্রময় নীরব ছবির গোবিমরু
থেমে গেলে সময়ের নিরক্ষর নিরাবিল নৃত্যডমরু
বোবা ও বধির এক সবুজ তৃণের গুচ্ছ আবির্ভূত হবে।