যখন নেমেছে রাত্রি

সুদীর্ঘ রাস্তার ‘পরে যখন নেমেছে রাত্রি
তখন মাথার ‘পরে আলো, অপরূপ সংগীতের ধ্বনি
ভিখারি তাকায়ে দেখে সমস্বরে মানুষেরা গেয়ে যায়-
তাদের চোখের তারার কালো মণি
সিঁদুরের মতো সমুদ্রের পারে যেন জ্ব’লে ওঠে
মানুষের পৃথিবীর প্রথম আরণি

মাথায় গাধা’র টুপি এঁটে নিয়ে
একহারা ছিপছিপে বহুতর নগরীর ভাঁড়।
বসন্তের জ্যোৎস্না: মোম। সুদীর্ঘ কিশোরী সব
প্রতিধ্বনিময় দক্ষ ফুটপাতে হল একাকার
জাহাজ এসেছে এক বোরোবুদুরের সমুদ্রের থেকে ভেসে
মাস্তুলের শীর্ষ তার সহাস্যে চাঁদের শিং ধরেছে এ-বার।

এই শতাব্দীর থেকে- ভিখিরি দেখিছে চেয়ে
এই সব সুরের রিরংসা ভেসে চ’লে যায় বিভিন্ন শতকে
ঢের আগে দার্শনিক দেখেছিল এই সব কামনার যাত্রীদের
দর্পণের মতো তার নখে
তার পর সব কোলাহল স্তব্ধ
একটি কুকুর শুধু রাস্তার পারে ব’সে নৃমুণ্ডকে বকে।

ভিখিরির শতচ্ছিন্ন আলখাল্লা- ভারতীয় প্রবাদের-
হয়তো-বা হারুন-আল-রসিদের- কৌতুকের মতো
যেইখানে জামা ছিঁড়ে সম্রাটের হাড়গুলো দেখা যায়
যেখানে সে কমলা-রঙের তালি বানাতে নিরত
আশীর্বাদ করি যারা জীবনের সাধে বেঁচে টের পায়
অধিক প্রবলতর হর্ষে কারা হয়েছে নিহত।