যখন নদীর জল থেমে আছে

যখন নদীর জল থেমে আছে বিকেলবেলায়
পৃথিবীর পরমায়ু ভ’রে তারা চ’লে অকপটে
অবশেষে তাহাদের প্রাণে এক নিস্তব্ধতা এল
যেন এক ছিপছিপে ভাস্করের হাতের নিকটে
তাহাদের কাজ আছে- অন্ধকার বিনীত পাথরে
তিন বার তিন ধনু জল
আপনাকে স্থির ক’রে রেখে দিল- স্থির
ক্রমেই আসন্ন মনস্বিনীর মতো মূর্তি অবিকল।

আমার হৃদয়ে এক বালকের মতন লঘুতা
শ্লেষ-সুরসিক সব পৃথিবীর মানীদের ভাষা
হস্তগত ক’রে এক ঢিল ছুঁড়ে ফেলে
জলকে জানাতে গেল: মিছেই পাথর ভালোবাসা
তবু হাত থেমে গেল- বিপরীত প্রীতির মোচড়ে
চার-দিকে নয় বার নয় ধনু জল
ঈষৎ ছায়ার চাপে স’রে আছে- ছায়া তুলে নিলে
হয়ে যেত গুল্ম, গ্রন্থ, নদী অবিকল।

তবুও কী ক’রে তাহা তুলে নিই।
শিশু-গাছে সবুজ গোধিকা এক পাথরের মতো নিস্তব্ধতা।
এ-সময় নিজের নিয়মে থেমে জন্তু, পাখি, চিল
অবশেষে গলা খুলে মানুষের মতো কয় কথা:
‘তোমার হৃদয়ে কোনও শান্তি নেই- অগণন গলি: স্যাকারিন;
অন্তহীন ফুটপাথে কোনও দিন পাবে না নিঃশেষ
তোমার উদরে গিয়ে মাখন হয়েছে মার্গারিন
আমোদ বিবর্ণ ক’রে গেছে অম্লরসিকের শ্লেষ।’

আমার হৃদয়ে এক বালকের মতন লঘুতা
শ্লেষ-সুরসিক সব পৃথিবীর মানীদের ভাষা
হস্তগত ক’রে এক ঢিল ছুঁড়ে ফেলে
তাহাকে জানাতে গেল: মিছেই রেখেছ নাকে ডাঁশা
তবু হাত থেমে গেল- বিপরীত প্রীতির মোচড়ে
চার-দিকে নয় বার নয় ধনু জল
ঈষৎ ছায়ার চাপে স’রে আছে- ছায়া তুলে নিলে
হয়ে যেত গুল্ম, গ্রন্থ, নদী অবিকল।

নয় বার নয় ধনু জলের পরিধি এই ব’লে গেল-
‘এখানে নদীর নাম মিরুজিন- মায়েল- কুহুলিন- ঘুল-
যেই সব জল তুমি দেখে গেছ ইঁদুরের বর্ণের মতো পৃথিবীতে
সে-সবের চেয়ে এরা পৃথক কেবল এক চুল
এক তিল ব্যবধান লম্পট ও প্রেমিকের মাঝে
মনীষী ও ধূসর ধূসরতম গাধার ভিতরে
এ না হলে মানুষের ডান গোঁফ, হে ক্লিষ্ট সন্তান,
বাম গোঁফ হয়ে যেত অপরূপ অবলীলাভরে।’