জোনাকির কাছে আমি

জোনাকির কাছে আমি শিক্ষা পেয়ে এক দিন অপরাহ্নে নিধূর্ম লণ্ঠন
নীরবে জ্বালায়ে নিতে- চারি-দিকে স্নিগ্ধ অন্ধকার
ঘিরে এল- সকল মানুষ তাতে ঘুমায়েছে দেখা গেল, প্রান্তরের রেখা
মিশেছে আকাশে গিয়ে- নদী মাঠ ঘাস
দাঁড়ায়ে রয়েছে সব- উঁচু-উঁচু হরিতকী ঝাউ
যে যাহার বুকে নিয়ে- জলের রঙের মতো ম্লান ভিজে নদীর ভিতরে
বাড়িগুলো বিপরীত মুখে সব- যে যাহার চূড়া
অপর স্বর্গের দিকে তুলে নিয়ে গেছে
আমাদের সমতল শান্ত অনুধাবনার দিকে
তাদের শিকড়, কৃমি, অন্ধকার, মরামাস, রস
রেখে দিয়ে- গভীর সন্দেহ এক সেই থেকে আমার হৃদয়ে
ঘিরে এল- পৃথিবীতে সমস্ত বিপন্ন কালো দার্শনিকদের
মোমের আলোর কাছে সারা-রাত যেই নিরুদ্যম চিন্তাগুলো
প্রতিভাত হয়ে ওঠে প্রিন্টারের ডেভিলের মতো
হেসে উঠে- মনে হল তাতে কিছু সত্য অন্তঃসার
রয়ে গেছে- ফুলের ভিতর থেকে পুষ্পসেনীকে খুলে পৃথিবীর স্থির প্রণয়ীর
প্রেম কিছু অবলঙ্- অথবা ফসল-খেতে বিকেলের অন্ধকারে চাষা
বীজ বুনে- (হরিতকী-ডালে জ্ঞানী) পেচকের সংস্পর্শ পাওয়ার আগে উঠে
যখন অন্নের লোভে চ’লে গেছে- সেই সব বীজ
কপট ক্ষিতিজ রেখা- বিবর্ণ কোদাল- কাস্তে- অন্ধকার মাঠ
মাঠের শিয়রে চাঁদ- পরিতৃপ্ত মানবের এক চুল ভ্রান্তির অন্যায়ে
সারা-রাত ব্যাজস্তুতি ক’রে যায় কৃষককে- তবু সারা-দিন
চালানির মাল হয়ে নগরীর বণিককে স্তুতি ক’রে যায়।