হিজল-ঝাউয়ের ডাল জ্বলছে সূর্যের আলোড়নে,
মেঘের পৃথিবী থেকে ছুটি পেয়ে বয়স্কা রূপসী,
আশ্বিন এসেছে নীলকণ্ঠের পালকে শাড়ি ঘষে,
পদ্মের স্তনে- আর ব্যথাতুর মনে।
মাছি রোদ শেফালি মিষ্টি ধান পায়রার ভিড়
সঙ্গে তার- পশ্চিমে মেঘের পিছে সূর্যের হৃদয়
নদী কাশ চোখা বাঁশপাতা থেকে রৌদ্রের ক্ষয়
করলে শাপলার বনে জেগে ওঠে জ্যোৎস্নার শরীর।
চারি দিকে বাড়ি সাঁকো গাছে নীড় উলুঘাসে ঢেউ;
নদীটির চলাফেরা মানবীর মতো;
মনে হয় সৃষ্টির ভেতরে প্রথমত
এ-সব জিনিস ছাড়া ছিল না ক’ কেউ।
এইখানে চিরদিন রয়ে যাবে সব।
নীলচে ডানার কাক আশ্বিনকে কাছে ডেকে আনে;
তিন-চার মাইল খেতে হরিণের প্রাণে
এসেছে অপার ব্যাপ্তির অনুভব।
শূন্য চারি দিকে নীল আকাশের মতো হয়ে আসে;
ক্রমেই গভীর নীল ব’লে মনে হয়:
অন্ধ ইলেকট্রন- তবু নিশ্চয়তার পরিচয়
নেই তার সনাতন নির্জন প্রকাশে।
[উষা । শারদীয় ১৩৬১]