কাঁকরের পথ দিয়ে

কাঁকরের পথ দিয়ে- বটের ছায়ার তল দিয়ে
যেতাম ইসকুলে রোজ কয়েকটা ছোট বই হৃদয়ে জড়িয়ে
সেই খোড়ো-ঘরগুলো- সেই মাঠ- সেই রোদ- খড়কুটা- বটফল- ঘাস
ছেলেগুলো মাস্টারেরা- ভাঙা বেঞ্চ- পিতলের সেই ঘন্টা- সেই খড়ি ম্যাপ- ইসকুলের জলের গেলাস
পুকুরের ঢালু পাড়- হাঁসগুলো- পাশের বাড়ির সেই মেয়েটি: কনকলতা নাম
অঢেল শটি’র বন- গোলাপি শটি’র ফুল- উঠানে খেলার কড়ি- মার্বেল- নখের আঁচড়- গর্ত- ঘাস- কচি আম-
বোলতা’র চাক- ভাঁটবনে ভিমরুল- মাদারের কাঁটাগুলো- বেলকুঁড়ি- পাকা বেতফল
জাম সজনের আঠা- লাটিম লাটাই ঘুড়ি- বাতাবি’র কিম্বা ছেঁড়া ন্যাকড়ার বল-
হঠাৎ বন্ধুত্ব হত- নিমেষেই ভেঙে যেত- আড়ি হত- অসম্ভব বেদনায় রাত্রি যেত কেটে
তবুও সকালবেলা ইশারায় ভাব ক’রে আমাকে সে কাছে ডেকে নিত
কেটে যেত সারা-দিন শুকনো পাতার পথে দুপুরের রোদে হেঁটে-হেঁটে
পুকুরের ডুব- কলমি’র মিষ্টি গন্ধ- সোঁদা ফুল- জলমেটুলির ফণা- হঠাৎ পা কেটে যেত গুগলি-শামুকে
থাকতে তুমি ঠায় ব’সে করবী’র তলে- আর জল নিয়ে খেলতাম গলাজল বুকে-

সে-সব কোথায় আজ? তাদের কারুর সাথে কত দিন হয় না ক’ দেখা
ট্রাম বাস্ ফুটপাথ- মেস থেকে মেসে-মেসে- চায়ের-দোকান থেকে চায়ের-দোকানে একা-