কালাতিপাত

সমুদ্রের প্রতিধ্বনিময় এক
আঁকাবাঁকা গুহার আঁধারে
প্রবেশ করিতে গিয়ে বোঝা গেল সুর ভাসে;
এই ক্রিট- এই কন্যাকুমারিকা
অতীতের ঐতিহ্যের পারে।
প্রকাণ্ড ধীমান এক দেবদারু- বিবরের থেকে
প্রশান্ত বায়ুর শব্দ নড়ে;
‘হে মানব’ ব’লে সে ডাকে না কোনেও জনগণদের।
আমি ক্লান্ত প্রাণ আজ প্রলাপপাণ্ডুর পৃথিবীতে
হৃদয়ের কাছে ঢের যুক্তি ছুঁড়ে
যখন মস্তিষ্ক গেল জিতে
শরণ নিলাম আমি সূচিমুখ জ্বেলে দিয়ে- স্তব্ধতায়-
কর্কট-বৃশ্চিক আঁধারের
শুনি আমি আরও শব্দ- যত দূর চ’লে যাই তত-
ওরা সব আমারই মতন
অনন্ত সমুদ্র ঘিরে বধির বদ্বীপ ইতস্তত
নিস্পৃহ ভূখণ্ড নিয়ে
এক-এক জন
আজ এই পৃথিবীর
স্তূপীকৃত- অন্ধ- নির্বান্ধব-
লোহার শকট-ভরা আবিষ্ট মানব
কিংবা আরও অশ্লীল তাহাদের শব
কতখানি নেত্র আর নাসিকার তরে
কতখানি মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের অক্ষুণ্ণ সঞ্চয়
ভাবিছে প্রতিভূ একা শীর্ণ জাদুঘরে
অদ্ভুত অঙ্গন তার জ্যোৎস্না আর তরুদের সঞ্চারণময়
তবু সে স্থবির চাষা- আদি পিতামহ- দুস্তর অঙ্গার-
মোরা সব সন্তানের সন্ততি তাহার
সময় গণনা আর করে না ক’ তাহার মিশ্রিত মৃত্যু বুকে নিয়ে
কখন সে আপেক্ষিক তরঙ্গে হারিয়ে
হয়ে গেছে অদ্ভুত অঙ্গন আর জ্যোৎস্না আর রক্ত- বালুকার-
হয়ে গেছে প্লিউসিন যুগের পাহাড়।