কেউ-কেউ ভেবেছিল

কেউ-কেউ ভেবেছিল পরিদৃশ্যমান এই পরিধির
সতত অধীর, দ্রুত কেন্দ্রের ভিতরে
হয়তো-বা বিষণ্নতা রয়ে গেছে- হয়তো সক্রিয় বিষ
তবু যাহা ভালো মনে হয় সেই সূর্যের সোনালি রশ্মি ঘরে
নেওয়া যাক- ফি-বছরে অন্তত এক দিন মাথায় গাধা’র টুপি এঁটে
রমণীর হাত ধ’রে গোল হয়ে ঘুরে-ঘুরে স্মরণীয় দিন যাক কেটে
তারা ভেবেছিল- কপালের দু’টো শিঙে, দ্বিখণ্ডিত খুরের মতন পায়ে-পায়ে
ভিড় এসে জিভ কাটে, বলে ওরা- মানুষের রগড় কোথায়?

অন্য কেউ ভেবেছিল পৃথিবীর পুরাতন পাণ্ডুলিপি ঘেঁটে
হয়তো বধির হবে এক দিন চোখ
তবুও সে-সবে কিছু অন্তঃসার রয়ে গেছে বটে
এই ভেবে হয়ে গেল ভয়ঙ্কর ভাবে নিষ্পলক
নাসিকাও হয়ে যায় চুনোট পৃথিবীর নিকষ পাথর
ক্রমে যেন তার পর খুলে গেল আশাতীত স্নায়ুর নির্ঝর
কেবলই বিষয় থেকে অপর নদীর মতো কিছু অন্বেষণ ক’রে গেছে বিষয়ান্তর
ঘোলাটে নদীর জলে; কপালের দু’টো শিঙে, দ্বিখণ্ডিত খুরের মতন পায়ে-পায়ে
ভিড়ে এসে কাদা ঝাড়ে, বলে তারা- মানুষের রগড় কোথায়?

আর কেউ ভেবেছিল- হয়তো-বা অবশেষে মানুষের প্রাণে
রয়ে গেছে কোনও এক গোপনীয় আড়
কিংবা রোজ রাতে সব অবরুদ্ধ গৃহস্থের ঘরে
উন্মুক্ত রয়েছে কোনও অকৃত্রিম দ্বার
পাথরের দেয়ালকে ভেদ ক’রে সেই দোর দেখা দেয় রোজ
অথচ দেয়াল থাকে দেয়ালের মতন সহজ
ভেবে হেঁয়ালিতে ডুবে থাকে; কপালের দু’টো শিঙে, দ্বিখণ্ডিত খুরের মতো পায়ে-পায়ে
ধূমাবতী তুড়ি দেয়, হেসে ওঠে- মানুষের রগড় কোথায়?

ওরা সব ভেবে যায় আমাদের ত্রিসীমার ভিতরে কেবল
রাত্রি হলে বিছানায় শোয়া জানোয়ারে
সকালে চায়ের কাপে সকলেই শ্রেণী- শ্রেণীহীন।
পুনরায় রাত হলে কাপড় খসেছে অন্ধকারে
আবার সকলে শ্রেণী, শ্রেণীহীন সকালবেলায়
পুনশ্চ কাপড় ছেড়ে রাতের ভিতরে বিছানায়
আমাদের ত্রিসীমানা- দ্রুত হয়ে লোল হল অক্ষরেখায়
সব দৃষ্টিকোণ হাসে এক-জোড়া চালু চশমায়।