কলকাতা আবার জেগে উঠেছে

কলকাতা আবার জেগে উঠেছে (এক দিন ম’রে যাবে যদিও)
হাজার-হাজার বছর আগে বেবিলন যেমন এমনি ভোরের বেলা জেগে উঠত
কাদের মস্ত-মস্ত বিরাট-বিবর্ণ প্রাসাদ সব ছড়িয়ে রয়েছে চারি-দিকে
এ যদি বেবিলন না হয়!-
ঐ আলিসার পায়রাগুলো যেন তিন হাজার বছরের পুরানো
আমি এদের প্রতিটি পায়রাকে বেবিলনের রাজপ্রসাদের চারি-দিকে ঘুরতে দেখেছি
তিন হাজার বছর আগের আকাশের গভীরতর নীল জানালায় উড়তে দেখেছি
সিংহের সোনালি কেশরের মতো জ্বলন্ত রৌদ্রে
কোন্ এক নিবিড় বেবিলনে।

কে এসেছ- তুমি না-কি?
তুমি বুঝি মনে করেছ তুমি বাইশ বছরের একটি নারী- এই নগরের
জারুলের একটি নরম শাখার মতো ফেনিল ফুলের রূপে জেগে উঠেছ আজ ভোরে
তিন হাজার বছর ধোঁয়ায় মিলিয়ে যায় তোমার মুখের দিকে তাকালে
বেবিলনের সেই বিবর্ণ প্রাসাদ জেগে ওঠে আবার
রাজপুরীর থেকে নেমে
রৌদ্রপ্লাবিত ভূমধ্যসাগরের মতো জ্বলন্ত রৌদ্রে
অনাদি সবুজ ঘাসের বাগানে এসে দাঁড়ালে তুমি
মাথা ঘিরে তোমার পায়রার ওড়াউড়ি
কোলে তোমার সোনালি সিংহের ছানা
চিতাবাঘের উজ্জ্বল চামড়ার শাল গায় তোমার স্তন, তোমার কাঁধের উপর
হাবশি-বালিকা একটি কালো প্রজাপতির মতো
তোমাকে ঘিরে ঘাসের ভিতর খেলা করছে
প্রখর রোদের থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে
সন্ধ্যার টায়ারের সমুদ্রের মতো তোমার প্রশস্ত নীলাভ খোঁপার ছায়ায়
আমি ব’সে রয়েছি
আজ ব’সে আছি যেমন
তিন হাজার বছর ধোঁয়ায় মিলিয়ে যায় তোমার মুখের দিকে তাকালে।