কর্কটের মতো এক রোগ

হয়তো-বা কর্কটের মতো এক রোগ
জমিছে শিরায়- মাংসে- ধীরে-
শুনিতেছি এ-যুগের আঁধার- দুর্ভোগ
হাহাকার করিতেছে শিবিরে-শিবিরে

চোখ যার আছে সে-ও চোখ উপড়ায়
সময়ের লুক্কায়িত নখ টেনে এনে
সৌন্দর্যেরে ছিঁড়ে ফেলে আগুনে জুড়ায়
সব শূন্য- সব ভস্ম- অন্ধকার মেনে

শুনিতেছি মধু নাই কোনও দিকে- সোম- সোনা নাই
মৌচাকে অবিরল পুঁজের গহ্বর
মৌমাছি সব হেজে হয়ে যায় ছাই
কটু গন্ধে কাঁপিতেছে শুয়ারের মাংসের ‘পর

কে-বা পাবে এই শূন্য শতাব্দীতে আর
আকাশের বাতাসের মতন শরীর
আমরা যে কড়ি শুধু- মাংস বিক্রেতার
চাপকান-আঁটা শুধু প্যাকাটির ভিড়

কে-বা খাবে আকাশের বাতাসের মতন শরীর
এই শূন্য শেষ শতাব্দীতে?
সব ফাঁকা- এইখানে নাই কোনও ভিড়
সব তারা বর্তমান শতাব্দীর দুঃখ আর শীতে

হেজে গেছে,- ও গো পাখি, আলো ও গো, সোনা
হে আমার মায়াবীর ইন্দ্রজাল-লগ্ন হাতুড়ির
চারি-দিকে অবক্ষার অন্ধকার সমুদ্রের লোনা
মাস্তুলের পচা কাঠ নয় আর হৃদয়ের নীড়

ও গো পাখি, ও গো সোনা, ইন্দ্রজাল আলো
চারি-দিকে ব্যথা সব: যেন ক্লান্ত কুকুরের দেহ
তবুও তো কুকুরের বর্ণমালা কোথাও হারালো
তার পর ভিজে ঘাস, শিশিরের মতো সব স্নেহ

উৎরাইয়ে উড়ে যায় দাঁড়কাক নীল
দানবের প্রাসাদের রূপসির মতো অগ্রসর
রাঙা সূর্য নিয়ে গেল পৃথিবীর সমস্ত সলিল
নীল লাল জানালার কাচের ভিতর

সেইখানে সুন্দরের হাতের কৌশল
এক তাল মাটি নিয়ে বাদুড়ের ডানা
বানায়ে পাঠায়ে দেয় গোধূলির ঘোরে অবিরল
সমুদ্রের এই পারে বধির নিশানা

এই সব;- এই সব আকাশের মতন শরীর
কে-বা ছোঁবে এই শূন্য শেষ শতাব্দীতে
নিম্নে- হাটে- শেয়ালের চেয়ে আরও শেয়ালের ভিড়
মানবীয় সুর আজও পারে নি ধরিতে।