মানুষ যা চেয়েছিল

(এখানে ঘাসের ‘পরে শুয়ে আছি)
গোধূলির রঙ লেগে অশ্বত্থ-বটের পাতা হতেছে নরম;
খয়েরি শালিখগুলো খেলছে বাতাবীগাছে- তাদের পেটের সাদা রোম
সবুজ পাতার নীচে ঢাকা প’ড়ে একবার পলকেই বার হয়ে আসে,
হলুদ পাতার কোলে কেঁপে-কেঁপে মুছে যায় সন্ধ্যার বাতাসে।
ও কার গোরুর গাড়ি র’য়ে গেছে ঘাসে ঐ পাখা মেলে ফড়িঙের মতো।
হরিণী রয়েছে ব’সে নিজের শিশুর পাশে বড়ো চোখ মেলে;
আঁকা-বাঁকা শিং ছুঁয়ে তাদের মেরুর গোধূলির
মেঘগুলো লেগে আছে; সবুজ ঘাসের ‘পরে ছবির মতন যেন স্থির;
দিঘির জলের মতো ঠান্ডা কালো নিশ্চিত চোখ;
সৃষ্টির বঞ্চনা ক্ষমা করবার মতন অশোক
অনুভূতি জেগে ওঠে মনে।…
আঁধার নেপথ্য সব চারি দিকে- কূল থেকে অকূলের দিক-নিরুপণে
শক্তি নেই আজ আর পৃথিবীর- তবু এই স্নিগ্ধ রাত্রি নক্ষত্রে ঘাসে;
কোথাও প্রান্তরে ঘরে অথবা বন্দরে নীলাকাশে;
মানুষ যা চেয়েছিল সেই মহাজিজ্ঞাসার শান্তি দিতে আসে।

আনন্দবাজার পত্রিকা। শারদীয় ১৩৬৪