মেয়েটির প্রাণে

মেয়েটির প্রাণে কোনও শান্তি নাই, আহা,
কৈশোর পেরিয়ে গিয়ে পেরুল যৌবন
মোমের প্রদীপ জ্বালে মাঝরাতে আজও
একটি বইয়ের পাতা তবুও করে না অধ্যয়ন

প্রকাণ্ড উন্নত গৃহে- দীর্ঘ মোম তার
আভা গেছে- সাত ভাই কৃত্তিকার কাছে
নৃপতির কাল থেকে যত চিন্তা জেগে উঠেছিল
সে-সবের পাণ্ডুলিপি সেইখানে আছে

অনেক গভীর দেরাজে স্তব্ধ হয়তো-বা
হয়তো-বা কোনও এক মহর্ষির মাথার ভিতরে
পুলস্ত্য পুলহ ঋষি ঘুরে যায় রাত্রির আকাশে
সেই মানবীয় মুণ্ড- মুণ্ডও সমভাবে সে-রকম করে

সেই প্রতিধ্বনিময়- দূর- প্যারাফিন শিখায় উজ্জ্বল
মননের অঙ্কুশ-চালিত প্রবাসে
মাননীয় মুণ্ডের মুখখামুখি এক-আধ বার-
মেয়েটির দন্তের এনামেল হাসে

বিতর্কে নিবিড় হয়ে হয়তো-বা
ধূম্র কাগজের ‘পরে সব পণ্ড মৃতদের হস্তাক্ষর
হয়তো-বা দেখে ফেলে। হয়তো-বা চেয়ে দেখে আসন্ন সম্মুখে
তবুও দাঁড়ায়ে আছে সাড়ে-পাঁচ হাত দীর্ঘ কষ্টিপাথর

অথবা সে বুঝে দেখে যখন দুইটি জীব মিশে
সন্তরণ করিতেছে গূঢ় অজ্ঞেয়ে
মোমের গভীরতর জ্যোতি বেঁচে আছে
সচ্ছল মশার মাংস খেয়ে

তখন সে হেসে ওঠে ভয়ঙ্কর- হিংস্র এক কাকাতুয়া পাখির মতন
কণ্ঠ থেকে অনর্গল তামাশার বজ্র বার হয়
মনে হয় জানালার ফাঁক দিয়ে পূর্ণিমার চাঁদটাকে
অন্তঃসত্ত্বা রমণীর গোল পেট ভেবেছে নিশ্চয়

এই সব প্রগলভতা নারীটির মনে
নিজের পায়ের নিচে একটি শনের মানে খুঁজে
কোনও দিন পাবে না সে- কোনও দিন-
প্রাসাদের ভয়ঙ্কর বিবর্ণ গম্বুজে

এখনও কঙ্কাল তার বায়ুর খোঁড়লে উর্ণাজাল বুনে হাসে
প্রবীণ পেঁচা’র কাছে জ্যোৎস্নার নিবিড় রৌদ্রে পরিচিত হয়
কাঁচের গেলাসে জল এনে যদি- যদি ছুঁড়ে ফেলা যেত তার বুকে এক বার
নগরীর সমুজ্জ্বল ঘড়িগুলো তবে আর কোনও দিন হত না বাঙ্ময়।