মোমের আলোয় চিন্তা

স্থির হেমন্তের রাতে বহু ক্ষণ চিত্তকে অধিকার ক’রে রাখে ভ্রম
স্মরণীয় দীর্ঘ দিন ভ’রে আমি বিচরণ করি নি কি বাইজেনটিয়ম
তক্ষশীলা- বুদ্ধগয়া- অক্সফোর্ড- আলেকজেন্ড্রিয়া’র
উপরে দেখেছি আমি ধীরে-ধীরে নামিতেছে কল্কি’র আঁধার
মক্ষিকার নীড় থেকে চুরি ক’রে তবে কেন এনেছি এ-রাত্রির মোম

যাদের হৃদয়ে জ্ঞান নাই আজও পৃথিবীতে- মানুষের মতো
মৌচাক বানাতে গিয়ে তাহাদের জ্যামিতিক গায়কি অন্তত
প্রাণের ইশারা দিলে দিতে পারে;- আবিষ্ট তৌলের মতো নয়
এই কথা ভেবে আমি সমস্ত প্রভাতবেলা থাকি নিঃসংশয়
যেন শিশুসন্তানের সাথে এক স্মিত পিতৃব্যের চুক্তি ছিল প্রথমত

তার পর রাত্রি আসে। পশ্চিম-সূর্যের শেষ পেনাম্ব্রা’র বিভা
দিনের রৌদ্রের আদি অনাত্মীয়- আর-এক প্রতিভা।
মনে হয় একটি সুদীর্ঘ দিন ভ’রে ছিল যেই সমাহৃতি
নিজের প্রতিভা নিয়ে সূর্য আর মানুষের অনিবার বিশেষ প্রতীতি
অন্ধকারে পৃথিবীকে স্পর্শ ক’রে বোঝা যায় সমস্তই বিলুপ্ত নিনেভে

যেই গন্ধ বাতাসে রাখিয়া যায় বৃষ্টির ফোঁটা
ধুলোকণা থেকে উঠে মহাপৃথিবীর মতো মোটা
(হতে পারে) ঝাড়ু পেলে- তক্ষশীলা, বুদ্ধগয়া, অক্সফোর্ড, আলেকজেড্রিয়া’র
উপরে গোধূম যদি নেমে আসে- প্রিয়তর মেষদের- তবু এই রাত্রির মোম
প্রবীণ আনন্দ এক: মেধা তিথি প্রয়োগের নাই অসংযম।