মরফিন ইঞ্জেকশন

মরফিন ইঞ্জেকশন দিয়েছে ডাক্তার
আজ তুমি গোলকের দ্বারে
মুখোমুখি এইখানে বসেছি চেয়ারে- অন্ধকারে
তোমার হৃদয়ে ঢের কথা পেতে তুমি
অন্তত দু’-দশ ঘণ্টা আবার পিছায়ে যেত যদি
কালও তুমি রোগশয্যায় শুয়ে- প্রায় দশটা অবধি
ডিক্টেট করেছিলে- তোমার কেরানি টাইপ করেছিল-
ঢের দূরে গুমোটের রাত ভ’রে উষ্ট্রগুলো বিচরণ করেছিল গোবি-মরুভূমি
সারা-রাত কোটি-কোটি মানুষেরা জেগে থেকে ক’রে গেছে অনুভব
নিদ্রা এক অমোঘ জিনিস
তবু আজ- তবু শুধু- সূতিকার শিশুদের তরে
সেই সব মৃত দিন, মৃত জননীরে পেয়ে আমরা ঘুমাতে যদি পারিতাম দোলনার ‘পরে

তবুও গলায় দড়ি দেয় নাই- জীবন অমোঘতর আশীর্বাদ যেন
কোনও বোমা- কোনও গ্যাস- তাহার নিকটতম অন্ধকার অভিসন্ধি ছাড়া
অসীম- নিঃস্বার্থ- এক নিদ্রায় চোখের আলোর লোভ কেন- নিভে যাবে কেন
সারা-জীবনের সব ফাইলগুলো কোনও দূর আলেকজান্দ্রিয়ার
লাইব্রেরিতে স্থান পাবে না কি
আহা, সে বলিত যদি: সারাটা জীবন আমি ছিপ হাতে
মরুর বালির ‘পরে মাছ ধ’রে গিয়েছি একাকী
মুখোমুখি দারা-পুত্র-পরিবার প্রসন্ন নদীর মাছ, কী ক’রে বলিবে?

ডাক্তারের মরফিয়া’র প্রক্রিয়াটা উপযুক্ত হ’লে
আবার প্রাণের শব্দ শোনা যাবে
বিকেল তিনটে হলে চায়ের টেবিলে- চীনে-বাসনের মতন প্রভাবে

সব লাল-ফিতে ফাইল শিডিউলের নিমেষেই মৃত্যু হয় যদি আমি বলি
শেক্সপিয়র’কে সে অমনই বিস্মৃতির অন্ধকারে দেবে জলাঞ্জলি:
‘এ-পিঠ ও-পিঠ শুধু ছাইয়ের- নয় চিরন্তন-‘
হয়তো-বা মাঝে-মাঝে আনকোরা প্রবাসী’র মলাটের ‘পরে তার মন
মখমল থাবা রেখে বুড়ো এক বিড়ালের মতো
সেই মাইলস্টোনটাকে ফেলে রেখে হেঁসেলের দিকে চ’লে যাবে।