নিমাইচরণ

নিমাইচরণ, তুমি বাংলার স্বদেশি যুগের আত্মা ছিলে
পোলিটিক্স কেন-যে বাংলা ছেড়ে গুজরাট’এ চ’লে গেল, আহা,
দেবতাও সেই কথা জানে না ক’- কোনও ফাঁকে আমরা জানিলে
প্যান্ডেল দখল ক’রে ব’সে র’ব, আহা,
আমাদের বাংলা’র তিন টন জ্যোতির্ময় সাহা
এই সব ছেঁদো কথা ছিঁড়ে যাক-
নিমাইচরণ, আজ এই হেমন্ত-বিকেলে, পঞ্চাশ বছর পরে আজও
বড়ো তৈল-চিত্ৰখানা ঝুলিতেছে দেয়ালের ‘পরে
টিফিনের ছুটি পেলে ভিড় এসে শেফালী তুলসী মালা বাতি এনে ধরে
তিন-শো পঁয়ষট্টি দিন বিড়ি-চুরুটের মাল নিয়ে, স্মৃতি-সভা ক’রে
আমি তার এম.এস-সি., বি.এল. নাতি- মনে হয়, ডুবে থাকি মক্কেলের ভিড়ের ভিতরে
সারা-দিন শূন্য ঘরে মাকড়ের সাথে ব’সে ওকালতি তবুও প্রশস্ত নয় আর
জমিদারি রেখে গেছে প্রেতলোক- মাথায় পাগড়ি বেঁধে সে-কালের দেশপ্রণেতার
ভিতরে বাতাস ছিল ঢের
আমাদের শাঁসগুলো কুরে খায় নব-নব প্রস্তাব- উন্মাদনা- হরিৎ ঘোষের
প্রস্তরের সিংহ ভাবে- আমারও তো মনে হয় সেই সব কী-ই-বা দোষের
নিমাই’এর মতো আমি হরিৎ’এর ক্যাম্প-অনুচর
তা না হলে কোন মুখে ব’সে র’ব পাতিকুমড়োর মতো ঘরের ভিতর
একটা-একটা ক’রে আন্তরিক বিড়ালের মৃত্যু হয়- যৌবনেই ঢের বুড়ো হয়ে
কোন কথা মুখে নিয়ে সন্ধ্যায় দাঁড়াব গিয়ে বক্তৃতার মঞ্চের উপর
চাপরাসি, নিমাই’এর ঘোড়া দু’টো মোমিন’এর মাঠে গিয়ে ঘাস খায় না-কি
বগিগাড়ি তমালতলায়- কেন সারা-রাত ভিজিছে একাকী
দুইটা কাঠের ঠ্যাং সারা-দিন ঘুরনচাকির মতো ঘুরেছে বহুল
এ-বার ট্যাক্সি এক ভাড়া করো- অসীম সিগার খাও- রাতের বাতাস খাক
জনগণমনঅধিনায়কের অবসন্ন চুল।