নিরঙ্কুশ

মালয়-সমুদ্রপারে সে এক বন্দর আছে শ্বেতাঙ্গিনীদের।
যদিও সমুদ্র আমি পৃথিবীতে দেখে গেছি ঢের:
নীলাভ জলের রোদে কুয়ালালুম্পুর, জাভা, সুমাত্রা ও ইন্দোচীন, বালি
অনেক ঘুরেছি আমি- তার পর এখানে বাদামি মলয়ালী
সমুদ্রের নীল মরুভূমি দেখে কাঁদে সারা দিন।

সাদা-সাদা ছোট ঘর নারকেল-খেতের ভিতরে
দিনের বেলায় আরও গাঢ় সাদা জোনাকির মতো ঝরঝরে।
শ্বেতাঙ্গ দম্পতি সব সেইখানে সামুদ্রিক কাঁকড়ার মতো
সময় পোহায়ে যায়, মলয়ালী ভয় পায় ভ্রান্তিবশত,
সমুদ্রের নীল মরুভূমি দেখে কাঁদে সারা দিন।

বাণিজ্য-বায়ুর গল্পে এক দিন শতাব্দীর শেষে
অভ্যুত্থান শুরু হ’ল এইখানে নীল সমুদ্রের কটিদেশে;
বাণিজ্য-বায়ুর হর্ষে কোনও এক দিন,
চারি দিকে পাম-গাছ- ঘোলা মদ- বেশ্যালয়- সেঁকো- কেরোসিন
সমুদ্রের নীল মরুভূমি দেখে রোখে সারা দিন।

সারা দিন দূর থেকে ধোঁয়া রৌদ্রে রিরংসায় সে-ঊনপঞ্চাশ
বাতাস তবুও বয়- উদীচীর বিকীর্ণ বাতাস;
নারকেল-কুঞ্জবনে সাদা-সাদা ঘরগুলো ঠাণ্ডা ক’রে রাখে;
লাল কাঁকরের পথ- রক্তিম গির্জার মুণ্ড দেখা যায় সবুজের ফাঁকে:
সমুদ্রের নীল মরুভূমি দেখে নীলিমায় লীন।

নিরুক্ত। আশ্বিন ১৩৪৮