নিষিদ্ধ শহর

বলিল সে: জান না কি এই এক নিষিদ্ধ শহর
কে বলিল- চ্যবন-ভ্রূকুটি ক’রে আমি ঐ সূর্যের দিকে
তাকালাম;- তবুও ছায়ার জীব- মনে হয় কোথাও অনেক মাছ নড়ে
ভাঙা মন্দিরের পাশে- করবী-লতার নিচে- জলের গভীরে
তারা সূর্য ভালোবাসে- ছায়া জল আছে ব’লে- পরিমাপ করার লাঠিকে
রাজমিস্ত্রি লুফে নিয়ে খেলা করে- অক্টারলোনি মনুমেন্টে চড়ে
তাহার ব্যাপারি দৃষ্টি- তবুও শাবল-হাতে কাহারও হৃদয়
মনে করে: লক্ষ মৃত- ইষ্টক পাথর চূর্ণ ছাড়া কিছু নয়
গণনা করার মতো আজ ভোরে- নিজেও সে মৃত হয়ে প’ড়ে আছে ভাবে
ভৈরবী রাস্তার ‘পরে- যদিও মৃত্যুর পরে চন্দ্রলোক নাই
তবুও নিজের মৃত্যু কাম্য নয় অন্যতর মরণের মতো
লম্বােদর সৌর পরিবারে জন্মে সময় সীমার অসদ্ভাবে
সনির্বন্ধ তিরোভাব ছাড়া আর লক্ষ সমষ্টির ব্যক্তিগত
সূর্য নাই; আমাদের রুদ্ধ শ্বাস (ত’রে গেলে) দেয়ালের পারে

(ত’রে গেলে)- সাগরের জলে ব্যাস খুঁজে পাবে মীন
আকাশের চক্রে ঘুরে- ঘুরে-ঘুরে- শকুনেরা চা’বে না ক’ অ্যাড্রিনালিন
কত দিন আপামর জীব এসে ব’লে গেছে তোমাদের চিন্তার পরিধি
অসতর্ক নাপিতের খুরের মতন যেন আমাদের আঁবের উপরে
নাপিতকে কে চেয়েছে?- আরও হেয় বিষাক্ত ইস্পাত।
পুকুরের জলে চরি- হাওয়ার ভিতরে উড়ি: পাখি
মানুষ: নাপতে-বাটির জলে হয় রক্তপাত
যা-নয়-তা-ই’কে চেয়ে, যে-কে-সের স্বার্থে আচমন ক’রে
তবুও দুপুর-রাতে নীল পাইপ জ্বেলে মনে হয় আগাগোড়া ফাঁকি
দেওয়া যায়;- দিয়ে গেছি;- আমরা গিয়েছি সব ত’রে

তোমাদের কাছে এই নিবেদন: অদৃশ্য বায়ুর থেকে উঠে
তোমরা ভূতের মতো এই-যে দাঁড়াও পথ জুড়ে
ত্রস্ত মনে: তোমাদের থ্যাঁতলায়ে যেতে পারি ছুটে
অমায়িক ব’লে যাই খানিকটা বাঁকা পথ ঘুরে
ফিরে চেয়ে মনে হয় তোমাদের দেহের উপরে যদি তোপ
প’ড়ে যেত অইখানে হেলিওট্রোপের মতো আকাশের থেকে
ডোডোপাখিদের মতো (তবে) তোমাদের সমস্ত প্রবাদ পেত লোপ
আমরা সটান শুয়ে কাটাতাম প্রামাণিক (পশমিনা) শালে শীত ঢেকে
তোমরা তবুও ব্যান, উদান, অপান-
যখন ক্ষীরের ‘পরে ক’রে ফেলে নিজেরে আরোপ
নকশাকাটা গাঢ় কালো পাথরের সাজ
কোন জন বিসদৃশ- কোনটি সুন্দর
আমরা ভাবিতে পারি। তোমাদের উদাত্ত উত্তর
তোমাদের। আমরা চক্ষু বুজে খেয়ে ফেলি প্রাকৃতের মতো
তোমাদের উদাসীন কপালের খাঁজ।

লোহার কলাই হয়ে প’ড়ে থাকে শুভ রৌদ্রে সত্য সারাৎসার
গিরেবাজ লক্কা-পায়রা হয়ে যায় থতমত।
এত কথা ভাবি যদি তোমাদের মুখখামুখি জেগে
ঘড়ি ধ’রে আধটি ঘণ্টা শুধু হাসিবে আবেগে
আমাদের নাড়িনক্ষত্রের নিক্তি, পনিরের মতো পরিবার।