নবতর ভিড় আসে

নবতর ভিড় আসে- সহসা বিস্মিত হয়ে ভাবি:
এ কি সেই পরিচিত ধূসর উচ্ছ্বাস;- টাকা, কাজ, ক্ষুধা, অন্ন, বিলুপ্তির তরে?
মনের মতন ক’রে এক দিন গড়িতে চেয়েছি যেই সময়ের ধূম্র আকৃতিরে
বাতাস যেমন ক’রে চায় গড়িবারে কোনও ক্লান্ত গরীয়সী গণিকার
বিপন্ন বিস্ময়টিরে- মুহূর্তের;
তার পর গূঢ় তামাশায় যেন চ’লে যায় পাখিদের ডানার পিছনে;
কারণ সে জানে বিচ্ছিন্ন বীজ রয়েছে এ-শতাব্দীতে- চারি-দিকে মননের অধিপতি সব
তাহাদের জন্ম দিল; তাহারা উঠিছে ফুঁড়ে জলের আনন আর বাতাসের প্রতিভারে হেসে- দূরে ঠেলে-
অনেক নিরন্ন বীজ রয়েছে এ-শতাব্দীতে- স্টিল আর প্রস্তরের ভিত্তির থেকে
তাহারা উঠিছে স্ফুরে;- তাহারা উঠিছে স্ফুরে,- যেন কোনও বিস্ফোরক তরঙ্গের ধ্বনি
পীবর দেহের গন্ধ যেন কোনও পীতবর্ণ মহীয়সী তটিনীর- যেন কোনও রক্তবর্ণ সমুদ্রের।

নবতর ভিড় আসে- প্রত্যুষের স্ফূর্তির মতন,
বিরাট আকাশ ভরা সমস্ত ঊষার মতো অদ্ভুত প্রয়াস;
বাতাস যেমন ক’রে চায় ভাঙিবারে নব-নব নাগার্জুন- কীর্তি- কিরীটিরে
নিরঙ্কুশ অক্লান্তির পীত দেবতারে;
তার পর গূঢ় তামাশায় যেন চ’লে যায় পাখিদের ডানার পিছনে।



[আবু হাসান শাহরিয়ার তার সম্পাদিত ‘জীবনানন্দ দাশের গ্রন্থিত-অগ্রন্থিত কবিতাসমগ্র (২০০৮)’ গ্রন্থে এই কবিতার শিরোনাম দিয়েছেন ‘বিস্ময়’ যদিও পাণ্ডুলিপিতে এর শিরোনাম না থাকায় প্রথম লাইনকেই শিরোনাম করা হয়েছে।]