নগরী

আমরা যে-সব নগরী অতিক্রম ক’রে যাচ্ছি সেখানে মজা রয়েছে
মাঝে-মাঝে সেখানে পাশাপাশি প্রায় লোকসেবা ও সেবাদাসীদের প্যান্ডাল দেখা যায়
শপথে-শপথে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে: (বহু মতামতের) কাঁচা ও প্রবীণ ফিরিস্তির।
তার পর অসংখ্য দগ্ধ চুরুটের উপর রাতের হিম
তার উপরে আকাশের শূন্যতা
নক্ষত্রের সরবরাহহীন।
মাঝে-মাঝে চামড়ার ব্যবসায়ী সদাগরেরা আসে
কোন সব জন্তুদের তারা মেরেছিল?
কিন্তু মানুষকে মারে নি
কোলাহল ক’রে
ফলাও ক’রে তারা দক্ষিণ সমুদ্রের দিকে চ’লে যায়
আমরা নগরীর এক দিকে ক্যাম্প খুলে ব’সে
গেলাসের ভিতরে তাদের সূর্য-
লোহিত সমুদ্র, উত্তর সাগর, বেরিন সিন্ধু
তখন অনুভব করি সূর্যের কী গৌরব
এবং জলের

‘আমাদের কিছু নেই বটে
কিন্তু তবুও অসম্ভব সৌকর্যের সম্ভাবনা রয়ে গেছে
যদি এই পৃথিবীতে পরীক্ষা চলে এক দিন
আমাদের মৃত্যুর আগে
আমাদের মতো মূঢ় লবেজান মোটবাহীদের পিঠের চামড়া দিয়ে’
সদাগরেরা গেলাসের উপরে চিপটেন কেটে বলে।
রূপসিদের শোরগোল ও গাধার হাসি
ক্রীতদাসদের করতালিতে বড়ো রৌদ্রের ভিতর দিয়ে।
(ও বড়ো রৌদ্রের ভিতর দিয়ে) সেই সব নগরীর পথ ধ’রে চলেছি
কোথাও কেউ প্রশস্ত, নীল আকাশের নিচে ভূমিষ্ঠ হবে সংবাদ পেয়ে
আমরাও কি ভূমিষ্ঠ হই নি এক দিন
আমাদের মনীষীরা উপদংশের জন্য সালভারসন তৈরি করে নি কি?
এবং অদেহী দেশের জন্য পাড়ায়-পাড়ায় দেহতত্ত্বের গান
আমাদের জননীরা? দেখ কী করেছিল।

নগরীর পথে আমাদের হৃদয়ে ঘুম আসে-
তবুও ঘুমকে পরাভূত ক’রে
হৃদয়ে যে অপরূপ করুণা আসে সমস্ত বিষকে ঢেকে ফেলবার জন্য
তাকে প্রত্যাখ্যান ক’রে তাকাই: আবহমানের দিকে আর নয়
আগামীর দিকে শুধু।