অঘ্রানের জ্যোৎস্না

ছোট একটা আম-গাছ:
কবে ফাল্গুনের রাতে আবার বোলের গন্ধে ভ’রে উঠবে কে জানে!
তারই কাছে একটা স্থবির পেঁপে-গাছ
যেন কোনও দানবের বনিতার মতো- উঁচু; ঘুমে ঘোর
এই অঘ্রানের সন্ধ্যায়।
(সেই মায়াবিনী) যেন কবেকার বয়সের রূপ ক্ষয় করতে-করতে
থেমে রয়েছে আজ
এই অঘ্রানের জ্যোৎস্নায়
মৃত্যুর আগে।
পেঁপে পাড়বার সময় এখন,-
চারি-দিকে প্রান্তরের বাদামি নিস্তব্ধতা
শিশির
হেমন্তের ফসল যেন পেঁচার ধূসর মাংসের ঘ্রাণের মতো
যেন মাইলের-পর-মাইল
বাতাসের নির্জনতার মতো
চাষাদের গোলার ভিতর থেকে
সেই নীরব স্বাদ ভেসে আসছে
মৃতার অন্ধকার ভাঁড়ারে
সাদা পাথরের বাটির মতো (একটি পেঁচা?)
পেঁপে-গাছের শিয়রে বসেছিল এত ক্ষণ
কেউ নয়- খড়ের নিঃশেষিত খেতের থেকে একটি বেকার পেঁচা
উড়ে চ’লে গেছে।
পেঁপে পাড়বার সময়
কয়েকটা ধূসর পেঁপে
আধখানা চাঁদের ঝাপসা আলোর ভিতর
যেন সরোজিনী আর তার বোনদের মতো।
কবেকার সেই সব!
অঘ্রানের জ্যোৎস্না: ঘোমটা নিয়ে এসেছে- কিছু বিদীর্ণ হবে না।
পেঁপে পাড়বে না কেউ আর।