অন্ধকার রাতে

অন্ধকার রাতে আমার মনে হল:
লক্ষ-লক্ষ লোক- কোটি-কোটি লোক আমরা এই কলকাতায় রয়েছি
একটা খণ্ডসমুদ্রের ভিতরে যে-সব স্পন্দিত প্রাণ রয়েছে- যাদের সাড়া আমরা পাই না
সেই রকম।

আমাদের সাড়া কে পায়?
আমরাই শুধু?
সেই খণ্ডসমুদ্রের সাড়া কে পায়?
শুধু সমুদ্র?

এই সমস্তকে গেঁথে তুচ্ছতম চড়ুই-কীটকেও অনুভব ক’রে কোথাও কি কেউ নেই?
কিছু নেই?
রাতের তারাকে জিজ্ঞাসা করলাম-

এক জন কুঠে: দু’ গালের মাংস তার বাঘে কামড়ে নিয়েছে যেন
পাকা পিয়ালের মতো চোখ তুলে সেই ভোরের থেকে তাকিয়ে রয়েছে একটি পয়সার জন্য
একটি ছেলে ট্রামে চাপা পড়ল
বারবনিতারা পয়সার অভাবে রাস্তায় নেমে এসেছে যে-কোনও রকম একটা শিকার খুঁজতে
রিকশাওয়ালার হাত-পা অন্ধকারের ভিতর মাকড়সার মতো ঘুরছে
তবুও দু’-দণ্ডের লোভ পেয়ে বসল তাকে!

আকাশের তারা বলে: আশ্চর্য হও কেন, আঘাত পাও কেন?
এই সমস্ত ভেঙে-মুছে নতুন সৃষ্টি করতে চাও তুমি?
যদি পারো- করো তা হলে
আমরা তো আর কিছু করতে পারলাম না।