অনেক গভীর ইচ্ছা

অনেক গভীর ইচ্ছা হৃদয়ের অন্ধকারে জমে
যদিও আবেগ পায়- তবু কোনও ভ্রূণ
চিনে নিতে পারে না ক’- অজাত শিশুর মতো সব
অথবা ভূতের মতো কোজাগরী জ্যোৎস্নার রাতে ঢের বহুল সময়
নষ্ট ক’রে ফেলে তারা- ঘুমে-ঘোর মানুষের দেহের ভিতরে
প্রবেশের পথ খুঁজে; একটি আঁচিলে তিলে কানের ফোকরে কেঁপে
নিয়ে আসে কম্পাসের মতো উন্মাদনা
যখন সমুদ্র নাই কোনও দিকে- সার্থবাহদের বোঝা
ঘরে চ’লে গেছে সব- চুম্বক-পর্বত অবিকল
সাদা, শ্লথ লবণের মতো ঝরে
কেবলই পরিধি দেয় নিস্তব্ধ জ্যোৎস্নাকে
কোথাও সময় নাই- দিক নাই আর।

আমি সেই ভূতদের টের পাই আমার হৃদয়ে
যেন তারা ম’রে গিয়ে টের পেল অবশেষে, আহা
সূর্যের আলোয় তারা পৃথিবীতে ঢিলের মতন এক-দিন
প্রান্তরে, আয়ুর ঘরে, অন্ধকারে
বেঁচে গেছে, হেসে গেছে, খেলা ক’রে গেছে
জল যেন তাহাদের স্পর্শ করেছিল
যেমন সূর্যকে আজও স্পর্শ ক’রে উজ্জ্বল গ্লব্যুল’এ নড়ে
নদীর ভিতরে; তবু কেহ- অথবা কাহারও জট- ব্রহ্মা’রও রোম
স্পৃষ্ট হয় নাই, আহা;- জ্যোৎস্না যেন ইন্দ্রধনুকের মতো জেগে এক-দিন
তাহাদের কোনও এক স্মরণীয় নগরীতে যেতে দিয়েছিল
কলরব করেছিল- ভালোবেসেছিল তবে আয়ুময় ঘুমের ভিতরে
সকল চোয়ালে মূর্ত তালা এঁটে- নির্জন গ্রন্থের
পরিভাষাদের মতো;- আজ তবে কথা বলিবার দিন
পাথরকে স্পর্শ ক’রে বুঝিবার দিন আজ
পাথরকে স্পর্শ করা হয়ে গেছে- ক্ৰমে সিঁড়ি বেয়ে
জলের ভিতর থেকে আলোর কুক্ষিতে আজ উঠিবার দিন
এইখানে জ্যোৎস্নায়, সূর্যের আলোয় তবু তারা আজ
সোনার মুদ্রার মূঢ় পরিধির শুরু আর সীমানার মতো
নিটোল সত্যকে এনে মিশায়েছে আপামর নিস্তব্ধতায়।