অনেক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে

অনেক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে
অনেক গভীর মধ্যরজনীতে মোম জ্বেলে
পড়িতেছে ব্যাকরণ- ন্যায়শাস্ত্র- দুই পাতা চার পাতা উপনিষদের-
প্লেটো পড়ে; দেহ আর নয় তার কুমোরের নিজের হাতের
এক তাল প্রিয় মৃত্তিকার মতো
হে আকাশ, হে সময়, হৃদয়ও কি হাত-ছাড়া হয়ে যাবে ধীরে
কমলালেবুর মতো- শেষ ফাল্গুনের খেতে- রাতের সমীরে
একটি শাখার শীর্ষে জেগে র’বে একা?
সব শেষ লেবুগুলো ঝ’রে গেছে; নাই কোনও পাখিনির দেখা!
নাই কোনও বিষাদের হাতের ঝাঁকুনি
সময়ের ছাতকুড়ো স্বাদ শুধু চারি-দিকে- ধূসর পারসি শাল বুনি
স্থবির দরজি যেন ঘাড় গুঁজে নুয়ে আছে
কথা কয় নিজ মনে- হেসে ওঠে অদন্ত মাড়িতে
ফাল্গুনের কুয়াশায়- নিস্তেজ দায়িত্বহীন শীতে
উপনিষদের পাতা খুলে যদি দেখ তুমি
টের পাবে নচিকেতা নাই আর নিচ-পৃথিবীতে
বহু দিন হল সে যে চ’লে গেছে স্বল্প ছেড়ে- অমৃতের লোভে
কাহার গরুটা শুধু অনেক ঘায়ের মাছি নিয়ে
মরিয়া কুকুর ক’টা কুকুরির বাচ্চা খেয়ে- কোকিল তাড়িয়ে
পৃথিবীতে র’য়ে গেছে-
বিড়ালটা সারা-দিন মৎস্যহীন গৃহস্থের টিকটিকি খুঁজে
নিরন্ন আঁধারে একা আছে চোখ বুজে।

হয়তো বনিতা ছিল তাহাদের এক দিন
আজ বারবনিতার তরে
জেগেছে প্রবল তৃষ্ণা নিরুত্তেজ মুটের অন্তরে
মাটির সরাইয়ে ভাত কিনে আজ সন্ধ্যায় গরিব কে-বা হবে
দিনমজুরির কড়ি নিয়ে তবু জীবনের শৃঙ্গ আর লিঙ্গের গৌরবে
দল বেঁধে ফিরে যায়
ডাইনোসর-কঙ্কালের বিকীর্ণ সাহারা
রাক্ষুসে ঢ্যাঁড়শ খেতে ভ’রে দেবে তারা
রয়ে গেছে পৃথিবীর এই সব ধূম্রবর্ণ ক্রেতা ও বিক্রেতা
এই সব নোনা মাছ, পচা ডিম, দ্রাবিড় ছেনালি ছেড়ে পালায় কোনও বীরচেতা
চোয়ালে অনেক শক্তি জড়ো ক’রে কথা ভাবে, কাজ করে, ঘরে যায়-
এই সত্য ছেড়ে দিয়ে অমৃতের দুরাশায়
কোথায় উড়িলে নচিকেতা!