অনুসূর্যের গান

কোনও এক বিপদের গভীর বিস্ময়
আমাদের ডাকে।
পিছে-পিছে ঢের লোক আসে।
আমরা সবের সাথে ভিড়ে চাপা প’ড়ে- তবু-
বেঁচে নিতে গিয়ে
জেনে বা না-জেনে ঢের জনতাকে পিষে- ভিড় ক’রে,
করুণার ছোট-বড়ো উপকণ্ঠে- সাহসিক নগরে-বন্দরে
সর্বদাই কোনও-এক সমুদ্রের দিকে
সাগরের প্রয়াণে চলেছি।
সে-সমুদ্র-
জীবন বা মরণের;
হয়তো-বা আশার দহনে উদ্বেল।
যারা বড়ো, মহীয়ান- কোনও-এক উৎকণ্ঠার পথে
তবু স্থির হ’য়ে চ’লে গেছে;
এক দিন নচিকেতা ব’লে মনে হতো তাহাদের;
এক দিন আত্তিলার মতো তবু;
আজ তারা জনতার মতো।
জীবনের অবিরাম বিশৃঙ্খলা স্থির ক’রে দিতে গিয়ে তবু
সময়ের অনিবার উদ্ভাবনা এসে
যে-সব শিশুকে যুবা- প্রবীণ করেছে তার পর,
তাদের চোখের আলো
অনাদির উত্তরাধিকার থেকে, নিরবচ্ছিন্ন কাজ ক’রে
তাদের প্রায়ান্ধ চোখে আজ রাত লেন্‌স্,
চেয়ে দেখে চারিদিকে অগণন মৃতদের চোক্ষের ফস্‌ফোরেসেন্‌স্‌।
তাদের সম্মুখে আলো
দীনাত্মা তারার
জ্যোৎস্নার মতন।
জীবনের শুভ অর্থ ভালো ক’রে জীবনধারণ
অনুভব ক’রে তবু তাহাদের কেউ-কেউ আজ রাতে যদি
অই জীবনের সব নিঃশেষ সীমা
সমুজ্জ্বল, স্বাভাবিক হ’য়ে যাবে মনে ভেবে-
স্মরণীয় অঙ্কে কথা বলে,
তা হ’লে সে কবিতা কালিমা
মনে হবে আজ?
আজকে সমাজ
সকলের কাছ থেকে চেয়েছে কি নিরন্তর
তিমিরবিদারী অনুসূর্যের কাজ।

পূর্বাশা। কার্তিক ১৩৪০