অশ্বত্থ বটের পথে

অশ্বত্থ বটের পথে অনেক হয়েছি আমি তোমাদের সাথী;
ছড়ায়েছি খই-ধান বহু দিন উঠানের শালিখের তরে;
সন্ধ্যায় পুকুর থেকে হাঁসটিরে নিয়ে আমি তোমাদের ঘরে
গিয়েছি অনেক দিন- দেখিয়াছি ধূপ জ্বাল, ধর সন্ধ্যাবাতি
থোড়ের মতন সাদা ভিজে হাতে- এখুনি আসিবে কিনা রাতি
বিনুনি বেঁধেছ তাই- কাঁচপোকা টিপ তুমি কপালের ‘পরে
পড়িয়াছ… তারপর ঘুমায়েছ: কল্কাপাড় আঁচলটি ঝরে
পানের বাটার ‘পরে; নোনার মতন নম্র শরীরটি পাতি

নির্জন পালঙ্কে তুমি ঘুমায়েছ- বউকথাকওটির ছানা
নীল জামরুল-নীড়ে- জ্যোৎস্নায়- ঘুমায়ে রয়েছে যেন, হায়,
আর রাত্রি মাতা-পাখিটির মতো ছড়ায়ে রয়েছে তার ডানা।
আজ আমি ক্লান্ত চোখে ব্যবহৃত জীবনের ধুলোয় কাঁটায়
চলে গেছে বহু দূরে;- দেখ নি ক’, বোঝ নি ক’, কর নি ক’ মানা;
রূপসী শঙ্খের কৌটা তুমি যে গো প্রাণহীন- পানের বাটায়।
(১৩২৬-এর কতকগুলো দিনের স্মরণে)

[১৩২৬-এর কতকগুলো দিনের স্মরণে]