অতিব্যয়িতা

যেখানে রয়েছে ঘাস ঘিরে এক স্বার্থহীন বন
সেইখানে ফাল্গুনের নদীর মতন
জলের ভিতর থেকে উঠে এক মেয়ে
আমার ঘাড়ের ‘পরে হাত রেখে ব’লে গেল: জন-সাধারণ

তুমিও তো এক জন- এমন জনতা
আপাদমস্তক ঘিরে রেখেছে তোমাকে
আগুনের সিংহদ্বারে দেখা হল তাই
কথা না ফুরাতে মনে হয় যেন তাকে

কোথাও দেখেছি যেন তবে-
পৃথিবীর বারবেলা কাত ক’রে আমরা-যে নাগর
চলেছে সে মাথার চুলের ‘পরে চুমো দিয়ে তবুও পায়ের নিচে নেমে
একটিই পরিশ্রম কেটে তবু চ’লে যায় মানুষের সাধে পূর্বাপর

সে মানুষ শেয়াল শকুন শনি ভাঁড়
অথবা পাত্ৰাধার তৈল হয়ে তবু তৈলাধার
পাত্র হয়ে থেকে যেতে পারে
মর্মান্তিক রাজকন্যাদের সাথে পাশা
খেলে মৃত যুগ থেকে পুনরায় তুলে নিতে পারে পরিভাষা

তার পর যখন সে পশ্চিমের দিকে
ভোরের সূর্যের খোঁজে সিংহ-দ্বার দিয়ে
চ’লে যায়- প্রামাণিক পুরুষেরা চ’লে গেছে ব’লে
আমি জন-সাধারণ চেয়ে দেখে মেয়েটিকে, রয়েছে দাঁড়িয়ে।

মাথার উপরে সিংহ-দ্বার
আড়া-আড়ি দু’টো তরবার
কিংবা আড়া-আড়ি
জন আর নারী

যে-সব বাণিজ্য যুদ্ধ ধূসর হয়েছে পৃথিবীতে
ছবির মতন তারা ফুটে আছে সুমুখের বৃহৎ আরশিতে
অনেক গভীর রক্ত লেগে আছে নারীর শেমিজে
তাহার মাথার চুল ততোধিক শিশিরের মৃদুতায় ভিজে

এখন সূর্যের প্রাণে তাই আর নেই কোনও ভয়
হৃদয় স্মরণে এলে দিক কিছু নয়- কিছু পশ্চিম প্রান্তরে সূর্যোদয়
হয়ে যায়- হয়ে গেছে ব’লে
সাদা সাধারণ শব্দ জেগে ওঠে যেন পৃথিবীতে ভোর হলে।