অতীত কালের দিকে চেয়ে

অতীত কালের দিকে চেয়ে দেখি- শীত দীর্ঘ স্তম্ভ সব দাঁড়ায়ে রয়েছে
আর্যাবর্ত’এ- গ্রীস’এ- চীন’এ- আলেকজান্দ্রিয়া’য়-
স্তম্ভ শুধু; তাহাদের তরু ব’লে মনে হয় না ক’ আজ
যদিও এ-পৃথিবীর জলের জননী এক দিন তাহাদের জন্ম দিয়ে গেছে
সেই জল আজ আর কোনও দিকে দেখি না ক’
আজিকার চলমান নতুন মৃত্তিকা
অন্য কোনও শিকড় চাহিছে- স্তম্ভ নয়- আরণ্যক তরুদের;
তা না হ’লে প্রভাতের রঙের তরঙ্গ বিবর্ণ প্রাসাদ শুধু বুকে ধ’রে
প্ররোচিত হবে; অবিকল সলিলের প্রাণের প্রেরণা
কোনও মৃত পৃথিবীর নির্বাপিত শিকড়ের সাথে কথা ব’লে
স্পন্দনের তৃপ্তি পাবে না ক’;
সময়ের সাথে পাশা খেলে সময়কে পরাহত ক’রে বেঁচে থাকা
তাকে শেষ বিজয়ের সেনাপতি জেনে তবু
আমাদের জীবনের সংকীর্ণ দিনের আভা তবু
অন্য এক উচ্চতর আলোড়নে স্পন্দিত আনন্দ পেতে চায়
তার পর শান্ত প্রবীণতা দীপ্তি চায়- আকাশের বৃহস্পতি-তারার মতন,
প্রান্তরের মতো;
অতীতের স্তম্ভ- তারা নক্ষত্রের জীব;
যেই সব নবোদিত তরুদের না স্ফুরিতে মরুভূমি নিয়ে গেল
যেই সব নবাগত তরুদের অস্পষ্ট আকুতি
দীর্ঘ ছন্দ গম্ভীর স্থাপত্য নিয়ে প্রশান্ত হবার আগে
অশ্লীল সন্দেহ ভয়- অশালীন চিন্তা জড়ো ক’রে বুনে-বুনে-
বয়ঃসন্ধি দিবসের অন্ধকার শৌর্য নিয়ে কাঠুরিয়াদের হাতে প’ড়ে গেল-
নিভে গেল-
মনে হয় যেন এই জীবনের গাঢ় পিতামহ- নিশীথের নিশ্চিন্ত বাতাস
সেই সব আকস্মিক শুক্ল যবনিকা ঢের দেখিয়াছে- দেখিয়াছে- তবু তার মন
বিচলিত নয়-
সে যেন দেখেছে তবু বহু বার
বসন্তের নিস্তব্ধ প্রভাত
মৃত্তিকার অন্ধকার গর্ভ থেকে মহনীয় বিলাপের মতো উঠে এসে
অন্য এক আবিষ্কারে বিবর্ণ পাথর- জল- মানুষের হৃদয়কে
সঞ্চারিত ক’রে দেবে ব’লে
সমগ্রের বীচি-বিক্ষোভিত উন্মেষের দু’-চারটি পতঙ্গের- মানুষের- অথবা জাতির
নিষ্ফলতা- মৃত্যু মনে ক’রে রাখি না ক’।