পাহাড়ের দেবদারু

পাহাড়ের দেবদারু- সমুদ্রের পার ঘিরে নারিকেল-বন
আঁধারের আলোকের জাম নিম রক্তাক্ত বুকের তরে এই সব শান্তির আস্বাদ
র’য়ে গেছে পৃথিবীতে; জানালায় আঁধারের নিঃশব্দ দেহের ঘ্রাণ নারীর মতন
সান্ত্বনার কথা কয়; তালের সবুজ ডানা: তাহার আড়াল থেকে চাঁদ

নীলাভ আকাশ ঘিরে জেগে ওঠে; অন্ধকারে নক্ষত্রেরা দেবতার সিঁড়ির মতন
কুহকীর প্রাসাদের- কোন দূর কুহকীর প্রাসাদের- স্থির হয়ে থাকে
দুপুরের রুক্ষ রোদে উদ্যমের রক্তপথে যাহারা হেঁটেছে অবিরত
অশ্রু ছাই লভিয়াছে; ঠোঁটের চুমোর মতো নিরন্তর স্পর্শে ঢেকে রাখে

তাহাদের হৃদয়ের শূন্যতারে নক্ষত্রের নীল শক্তি আশ্বস্ত আকাশ
এই সব শান্তি আছে এ-জীবনে- জানি আমি- বহু দিন থেকে আমি জানি
ভোর, আলো, ডালপালা, রাঙা মেঘ, নক্ষত্র, একাকী চাঁদ, ঘাস
পৃথিবীর বেদনার পাশে এরা যেন দূর জগতের প্রাণী

আমরা আঘাত পাই, কথা বলি, কাজ করি, জানি না গোপনে
কাহারা নিকটে সব র’য়ে গেছে; দিন-রাত নিঃশব্দ ইশারা;
পাতায় লতায় মেঘে খেলা করে- বিজন গভীর রাতে আপনার মনে
শাখা নড়ে- পাতার ভিতরে নীল কোলাহল শোনা যায়- যেন এই কোলাহল ছাড়া

এই সৃষ্টি চলিত না- কোনও শান্তি কোনও স্বপ্ন থাকিত না কোনও দিকে আর
একখানা তুচ্ছ শাখা যখন দুলিয়া ওঠে নিজেরে তুলিয়া ধরে নিবিড় আকাশে
সমস্ত নক্ষত্র যেন শান্তি পায়- গভীর আশ্বাসে যেন ভরে অন্ধকার
আলো রোদ সৃষ্টির চোখ যেন ভ’রে ওঠে নির্জন আশ্বাসে

আমারও হৃদয় এই পাতার সুনীল ধ্বনি- শাখাদের আকাঙ্ক্ষা আবেগ
রাত্রি-দিন আকাশের জানালায় সংখ্যাহীন নক্ষত্রের ভিড়
এই ঘাস- এই রোদ- অন্ধকার- সকালের গোধূলির মেঘ
ইহাদের পাশে এসে ভুলে যায় জীবনের রক্তাক্ত শরীর!