পথান্তর থেকে পথ ফিরে যায় পথে

পথান্তর থেকে পথ ফিরে যায় পথে
সরাই রয়েছে প’ড়ে জন-মতামতে
কেবলই পায়ের দাগে এ-পথ ধূসর
মনে হয় মিছিল চলেছে নিরন্তর
তবুও কোথাও কেউ নেই, পথে বিরল মমতা
ঠোনা দিয়ে মানুষের হৃদয়ের কথা
(এক বার বার ক’রে নিয়েছিল ব’লে)
আড়কোলা ক’রে নিয়ে মানুষকে কোলে
নিয়ে যায় ধীরে-ধীরে গন্তব্যের দিকে
নির্দিষ্ট প্রাসাদে, রঙে, নির্দিষ্ট তারিখে

তবুও স্বাধীন আমি, মর্যাদার আত্মার মতন
নিঃশব্দে পথের পাশে হৃদয়ের কোনও পরিজন
দাঁড়ায়ে রয়েছে তবু যেন মৌন হয়ে
তাহার অস্পষ্ট মুখে এ-রকম অভিজ্ঞ বিনয়
যাতে তাকে ভুলে গিয়ে- তবু চির-কাল
মনে হয় প্রেম কেন এমন ভয়াল
যত দূর দেখা যায় আকাশ-মাটির ভেদ-রেখা
কালো লাইনের মতো মুছে গিয়ে দিয়ে যায় দেখা
একটি সঙ্কীর্ণ গাছ তত দূর সীমানার আলেয়ায় গিয়ে
লালিত জন্তুর মতো রয়েছে দাঁড়িয়ে
নিজেকে লেহন ক’রে
কোনও দিকে দ্বিতীয় তরঙ্গ নেই আর
অপর একটি গাছ, উন্নত পাহাড়
থেকে যেত যদি এই সমতল দেশে
এতগুলো ম্লান মাটি অকস্মাৎ শেষে
বিবর্ণ প্রাসাদ নিয়ে পৃথিবীর পারে
দাঁড়াত কি বিড়ালের মতো চোখে দিনের আঁধারে

তবুও বিড়াল নয়, পূর্বস্মৃতি সব
পৃথিবীতে প্রেম ক’রে এখানে করেছি অনুভব
বাণিজ্য-বায়ুর মতো বন্দরের দিকে
নির্দিষ্ট প্রাসাদে এসে নির্দিষ্ট তারিখে
তবুও দূরের থেকে দেখে গেছি জন্ম-জন্মান্তরে
কাদের স্বর্গীয় পটু মনোভাব হাত হয়ে নড়ে
তাহাদের বৈকুণ্ঠের মতো কনুইয়ের শেষে রয়ে গেছে লাল
অলোকসামান্য ভারে উচ্ছ্রিত মশাল
আমার প্রাণের থেকে আলোড়িত বাণিজ্য-বাতাসে
সাদা অঙ্গারের মতো তাদের মুখের আভা বার হয়ে আসে

পুনরায় জ্ব’লে ওঠে- অপরিচিতের মতো তারা
দৃঢ় আত্ম-মর্যাদায়- পরিচিত বন্ধুদের ছাড়া
গ্রহণ করে না কোনও দ্বিতীয় প্রাণীকে
নির্দিষ্ট প্রাসাদে গিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে
পৃথিবীর চিক তুলে জন্ম-জন্ম ভেবেছি: আমি কে?
পুনরায় চ’লে গেছি নরকের চিকে।